দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে অনুষ্ঠিত সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অংশগ্রহণ করেন।

পরীক্ষা শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্বেচ্ছাসেবক পরিষদ (জাবিস্বেপ) তাকে সংবর্ধনা দেয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনেওয়াজ। তিনি বলেন, নানা চড়াই উৎরাই পার করে লিমন এখানে এসেছে। আশা করছি সে এখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। তিনি লিমনকে উদ্দেশ্ করে বলেন, তুমি অনেক বড় হও, এই দোয়া রইল।

সংবর্ধনা শেষে লিমন জাবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এমএ মতিনের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় উপাচার্য তাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে লিমন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আশা করছি মেধার মাধ্যমেই এখানে ভর্তির সুযোগ পাব। এখানকার স্বেচ্ছাসেবী বড় ভাইয়েরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তাদের জন্য আমাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। এমনকি স্কেচারও আনতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার সহযোগিতায় আমি মুগ্ধ।’

সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লিমন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য পাইনি। তবে বর্তমানে সরকারি বাহিনী কর্তৃক হয়রানির মাত্রা কমেছে।’

সরকারের কাছে কোনো চাওয়া আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বিনা দোষে স্বাভাবিক জীবন থেকে প্রতিবন্ধী জীবনযাপন করছি। সরকার যেন আমার লেখাপড়াসহ সকল দায়দায়িত্ব নেয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাকে আমার দুঃখের কথা শোনাতে চাই। সরকারি বাহিনী কর্তৃক আর যেন কাউকে পঙ্গুত্ববরণ করতে না হয়।’ এ সময় তিনি দ্য রিপোর্টের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।

উল্লেখ্য, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব) ২০১১ সালের ২৩ মার্চ সন্ত্রাসী সন্দেহে ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমনের বাম পায়ে গুলি করে। লিমন বার বার নিজেকে ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিলেও র‌্যাব তার কথায় কর্ণপাত না করে গুলি ছোড়ে। এতে তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। পরবর্তীতে লিমনের নামে মামলা করে র‌্যাব। বিভিন্ন সংগঠনের কঠোর সমালোচনার মুখে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয় র‌্যাব।

বর্তমানে লিমন সাভারের নবীনগরে অবস্থিত গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে কোনোভাবে তার পড়ালেখা চালাচ্ছেন। জাবিতে তিনি প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এফএস/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪)