নড়াইলে মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে সুলতান মেলা
নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ৮দিনব্যাপী সুলতান মেলা। বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৮৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নড়াইল জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এ মেলা চলবে ৪মার্চ পর্যন্ত।
সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু জানান, মেলায় গ্রামীণ খেলাধুলাসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে থাকছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চিত্রপ্রদর্শনী, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি, এক্কাদোক্কা, মোরগ লড়াই, বউছি, হা-ডু-ডু, দড়ি লাফ, কাবাডি (মহিলা), ঘোড়ার গাড়ির দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, ভলিবল প্রতিযোগিতা, লাঠি খেলা, কুস্তি, সুলতান পদক প্রদান, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান। এছাড়া প্রতিদিনই থাকছে বরেণ্য এ শিল্পীর জীবন ও কর্মের ওপর সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ বছর সুলতান পদক প্রদান করা হবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রফেসর মুনছুরুল করীমকে ।
মেলা প্রাঙ্গণে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শতাধিক ব্যবসায়ী নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বিকেলে মেলার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। ৪ মার্চ সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এমপি।
১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল পৌরসভার মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। তার পিতার নাম মেছের আলী এবং মাতার নাম মাজু বিবি। প্রকৃতিপ্রেমিক চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান চিত্রা নদী, পশুপাখি ও শিশুদের ভালোবাসতেন। তিনি শিশুদেরকে নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চিত্রা নদীতে ঘুরে বেড়াতেন ও ছবি আঁকতেন। এ মহান চিত্রশিল্পী তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন মেহনতি ও শ্রমজীবী মানুষের ছবি। তাঁর আড়বাঁশির মোহনীয় সুরে সবাইকে মুগ্ধ করতেন। তিনি শিশুদের জন্য নির্মাণ করেছিলেন শিশুস্বর্গ। শিল্পী সুলতান ভালোবাসতেন মাটি ও মানুষকে। তাঁর আঁকা ছবি লন্ডনের লেইস্টার গ্যালারি, নিউইয়র্ক, বোস্টন ও মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তানের লাহোর, করাচি, সিমলাসহ বহু দেশী-বিদেশী গ্যালারিতে পিকাসো, সালভেদর দালিসহ প্রখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়েছে।
১৯৮২ সালে সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি এবং ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক’-এ ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি সবাইকে কাঁদিয়ে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪)