‘আমাদের এই পৃথিবী সীমাবদ্ধ, মুক্ত নয়’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার উপন্যাসের মধ্য দিয়ে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভিত্তি রচনা করেছেন। উপন্যাসের আধুনিক রচনারীতির সঙ্গে ভাষার অনন্যতা যুক্ত হয়ে বঙ্কিমসাহিত্য আমাদের শিল্প ভুবনকে করেছে সমৃদ্ধ। শুধু উপন্যাস নয়, চিন্তামূলক রচনার মধ্য দিয়েও তিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকতার জগতে যোগ করেছেন নতুনতর মাত্রা। সাময়িক কিছু সীমাবদ্ধতা হয়তো তাকে বিচলিত করে থাকতে পারে কিন্তু চিরকালের বিচারে বঙ্কিমচন্দ্র এক অসামান্য শিল্পীর মার্যাদা পাবেন। সোমবার বিকাল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ‘বঙ্কিমচন্দ্র : পিঞ্জরের বয়ান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মাসুদুজ্জামান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুব্রত বড়ুয়া, খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, ইমানুল হক এবং জাকির তালুকদার। সভাপতিত্ব করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘বঙ্কিমচন্দ্র যথার্থই বুঝেছিলেন, আমাদের এই পৃথিবী সীমাবদ্ধ, মুক্ত নয়। মানুষকে এই পৃথিবীর সীমাবদ্ধতাকে বুঝতে হবে। আর এই পৃথিবীকে বুঝতে পারলেই মানুষ নিজের আত্মপরিচয়কে উপলব্ধি করতে পারবে। তার কালজয়ী উপন্যাসসমূহে আত্মপরিচয়ের এমন উদ্বোধনের পাশাপাশি দেশকে তিনিই প্রথম মাতৃরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বাংলা ভাষা ও বিষয়ের পরিসরকে বঙ্কিম এতটাই বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যে তার উপর ভিত্তি করে রবীন্দ্রনাথের মতো চিরস্মরণীয় প্রতিভার আবির্ভাব সম্ভব হয়েছিল।’
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শামসুল হক বলেন, ‘বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিচিত্রমুখী শিল্পের সৃজনকর্তা। সমসাময়িক রাজনৈতিক-সামাজিক তরঙ্গ তাকে আলোড়িত করলেও শিল্পী স্বভাবে তিনি যে চিরায়ত আধুনিক চেতনার প্রতিষ্ঠা করেছেন তা উত্তরকালের কথা শিল্পীদের কাছেও সমান শিক্ষাযোগ্য বিষয়।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/কেএম/ফেব্রুয়ারি ২৪,২০১৪)