‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি খোকার
মাহমুদুল হাসান, দ্য রিপোর্ট : সরকার পতন আন্দোলনে ঢাকা মহানগরীর ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্ততি নিয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থল চন্দ্রিমা উদ্যানে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এ শোডাউন করতে চান তিনি। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আলী আজগর মাতাব্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেমে জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বয়ক সদ্য কারামুক্ত সাদেক হোসেন খোকা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন।
তিনি আরো জানান, ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খোকা কারাগারে থাকা অবস্থায় দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কাছে তাকে ব্যর্থতা প্রমাণ করার জন্য অনেকেই চেষ্টা করেছেন। তার বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। এর জবাব দিতে চান তিনি, যে কারণে নিজেই সিনিয়র নেতাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ফোন করেন। ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে তিনি জানান দিতে চান তার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ নেই। মহনগরীর নেতাকর্মীসহ দলের সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে আছেন।
এ ব্যাপারে দলের একজন সিনিয়র সদস্য দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘উনি (খোকা) ফোন করেছিলেন প্রোগ্রামে থাকার জন্য। শুনেছি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবও থাকবেন। এ ছাড়া তিনি অনেককেই ফোন করেছেন মাজারে থাকার জন্য।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আন্দোলনে ব্যর্থতার অভিযোগে দলের ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর পর থেকে বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তৈরি হয় দুই গ্রুপ। এক গ্রুপ বর্তমান কমিটি বহাল রাখার জন্য দলীয় প্রধানকে বোঝানোর চেষ্টা করছে; অপর পক্ষ খোকাকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা ও দ্রুত বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া নিজেই বিব্রত অবস্থায় রয়েছেন। সিদ্ধান্ত নেন খোকা জেল থেকে বের হলেই নতুন কমিটির কাজ শুরু করবেন।
প্রসঙ্গত, স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এক মাসের সময় দিয়ে মহানগর কমিটি করা হবে। ঢাকার ১০০টি ওয়ার্ডে সম্মেলন করে নতুন কমিটি হবে। এই কমিটিগুলো নতুন করে সাজানোর জন্য বিশেষ কমিটি করা হবে। এরপর খালেদা জিয়া ৯ ফেব্রুয়ারি দলের মহানগর কমিটির নেতাদের গুলশানের দফতরে ডাকেন। সবার বক্তব্য শুনে তখন দু-এক দিন সময় বেঁধে দেন বিশেষ কমিটি করার জন্য। তবে এখন পর্যন্ত বিশেষ কমিটি আলোর মুখ দেখেনি।
মহানগরীর এক নেতা দ্য রিপোর্টকে বলেন, খোকা ভাই কারাগারে ছিলেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আমরা জানান দিতে চাই, তার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের ব্যাপক প্রস্ততি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৪ মে সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক এবং আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করেন খালেদা জিয়া। এই কমিটিকে ৬ মাসের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। ওইসব কমিটি গঠনের পর নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে জানানো হয়। দুই বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৪)