দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের আল্টিমেটামের মুখে রমজানের আগেই সরানো হলো সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের সামনে স্থাপিত ‘লেডি জাস্টিস’ খ্যাত গ্রিক দেবীর মূর্তি।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মূর্তিটি সরানোর কাজ শুরু হয়। যা শেষ হয় রাত চারটার দিকে। পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই মূর্তিটি না সরালে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে আসছিল ধর্মভিত্তিক দলগুলো। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ওই সব দল।

শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরাও মূর্তি সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছে। গত মাসে কওমি আলেমদের সঙ্গে বৈঠকে এই মূর্তি সরানোর পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সেই থেকে মূর্তি সরানো না সরানো নিয়ে নানারকম গুঞ্জন ছিল। সব গুঞ্জনের অবসান করে শেষ পর্যন্ত রমজানের আগেই মূর্তিটি সরানো হলো।

মূর্তি সরানোর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকেদের বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নির্দেশে ভাস্কর্যটি সরানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকেছিলেন এবং ভাস্কর্য বিষয়ে মতামত নিয়েছিলেন। এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য ভাস্কর্যটি এখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মত দিয়েছিলেন।

ভাস্কর্যটি কোথায় রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বলেছি ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্ট অ্যানেক্স ভবনসংলগ্ন জাদুঘরের সামনে স্থাপন করা যেতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটির নির্মাতা মৃণাল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এটি যত্ন করে সরানোর কাজ তত্ত্বাবধান করেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট চত্বর ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তবে ভেতরে যখন মূর্তি সরানোর কাজ চলছিল তখন বাইরে বিক্ষোভ করছিলেন প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের চারদিকের ফটক লাগানো ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভাস্কর্য সরানোর খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে ছুটে আসেন বিক্ষুব্ধরা। দুইটার দিকে বেশ কিছু তরুণ সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভের মধ্যেই ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শেষ হয়। সেখান থেকে ক্রেনের সাহায্যে ভাস্কর্যটি একটি ছোট ট্রাকে তোলা হয়। ভাস্কর্যটি অ্যানেক্স ভবনের ভেতরে পানির পাম্পের পাশে নিয়ে রাখা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এদিকে মূর্তি সরানোর প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন এবং ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এম/এনআই/মে ২৬, ২০১৭)