দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্ট মূল প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে নেওয়া ভাস্কর্যটি কোর্টের বার্ধিত (অ্যানেক্স) ভবনের সামনে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

শনিবার রাত ৮ টার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে আপিল বিভাগের সামনে ভাস্কর্য পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়। রাত ১২টা নাগাদ এটি কংক্রিটের ভিত্তির ওপর বসানো হয়, যা প্রায় রাত দুইটা নাগাদ চলে।

সশরীরে উপস্থিত হয়ে পুনঃস্থাপনের কাজ তদারকি করেন ভাস্কর্যের নির্মাতা মৃণাল হক।

এর আগে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের দাবির মুখে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার ও শনিবার সুপ্রিম কোর্টের পানির পাম্পের সামনে তা রাখা হয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে একটি ছোট পিকআপে করে ভাস্কর্যটি ভবনের সামনে আনা হয়। পরে ভারোত্তোলক যন্ত্র দিয়ে পিকআপ থেকে ভাস্কর্যটি নামানো হয়। এটি পুনঃস্থাপন করতে বেশ কয়েকজন শ্রমিককে ঝালাইসহ বিভিন্ন কাজ করতে দেখা যায়। এদিকে ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পৌনে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

২০১৬ সালের শেষের দিকে গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়। এরপর প্রায় দুই মাস এ বিষয়ে মুখ না খুললেও গত ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনে নামে হেফাজতে ইসলাম। দলটির আমির আহমদ শফীও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি সরানোর দাবি জানান। এরপর থেকে হেফাজতের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মভিত্তিক সংগঠনও ভাস্কর্যটি সরানোর দাবি জানিয়ে আসছে।

গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জন্যে নির্মিত আবাসিক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বৃহস্পতিবারও সকালে রমজানের আগেই ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

এর আগে ইসলামী ঐক্যজোট হরতালের ঘোষণা দেয়। অব্যাহত হুমকি আসে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দল, ওলামা লীগসহ সুন্নিপন্থী একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও।

এদিকে ভাস্কর্য রক্ষার দাবিতে রাস্তায় নামেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রগতিশীল মানুষেরা।

সর্বশেষ ভাস্কর্য সরানোর দিন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে গণজাগরণমঞ্চের কর্মীসহ বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। যাদের কয়েকজন এখন পুলিশের হাতে আটকও রয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ২৮, ২০১৭)