দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে সংসদের হাতে প্রদান করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি চলছে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে দশম দিনের মতো এই শুনানি হচ্ছে। এ দিনেও অ্যামিকাস কিউরিরা আদালতে তাদের মতামত প্রদান করছেন।

বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

সোমবার অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিযুক্ত ১২ জন আইনজীবীর মধ্যে সাতজন তাদের বক্তব্য শেষ করেন। বক্তব্য প্রদান শুরু করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। তার বক্তব্য অসমাপ্ত অবস্থায়ই ওই দিন শুনানি শেষ হয়।

মঙ্গলবার আজমালুল হোসেন কিউসি তার অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করেন। এরপর মতামত প্রদান শুরু করেন আরেক অ্যামিকাস কিউরি এ জে মোহাম্মদ আলী।

গত ২৪ মে এই মামলায় অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য প্রদান শুরু হয়। টানা শুনানিতে ১২ জন অ্যামিকাস কিউরির মধ্যে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বিচারপতি টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, এম আই ফারুকী।

এ ছাড়াও এই মামলায় অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ফিদা এম কামাল।

গত ৮ মে পেপার বুক থেকে রায় পড়ার মাধ্যমে এই মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। ৯ মে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়। এ দুদিন রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা হাইকোর্টের রায় আদালতে পড়ে শোনান। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১ মে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

পরে ২১ মে তৃতীয় দিনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের লিখিত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন মুরাদ রেজা। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে এই মামলার শুনানি হচ্ছে।

এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ।

বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। এরপর তা ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এ আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ৫ মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। তিন বিচারকের মধ্যে একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠদের রায় প্রকাশিত হয় গত ১১ আগস্ট এবং রিট খারিজ করে দেওয়া বিচারকের রায় প্রকাশিত হয় ৮ সেপ্টেম্বর। দুটি মিলে মোট ২৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এনআই/মে ৩০, ২০১৭)