‘তাড়না থেকেই লেখালেখি করি’
সিজন নাহিয়ান মূলত কবি। ‘উদ্বাস্তু সিরিজ’ নামে এবারের মেলায় তার একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে চারুলিপি প্রকাশন। গেল বছর প্রকাশিত হয়েছিল বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক ও ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের সাক্ষাৎকার বিষয়ক গ্রন্থ ‘ভাষার কথা একুশের কথা’। সিজন নাহিয়ানের নানা দিক নিয়ে দ্য রিপোর্টের পক্ষে কথা বলেছেন মুহম্মদ আকবর।
লেখালেখির অনুপ্রেরণা পান কোথা থেকে?
লেখালেখি মানুষের একটি মৌলিক গুণ। আমার মতে, এই একটি পথ নিজের ভেতরকার সত্তার সন্ধান করতে, তার পারিপার্শ্বিকতার বেড়াজাল ছিন্ন করতে, সমাজের কাছে দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রবিশেষে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি কিংবা সমাজ ব্যবস্থায় অগ্রগামী ভূমিকার কথা বলতে মানুষকে সাহায্য করে। আমি ঠিক এ তাড়না থেকেই লেখালেখি করি।
পাঠ্যপুস্তকের ফাঁকে লেখালেখির সময়টাকে কীভাবে ভাগ করে নেন?
আসলে লেখালেখি সম্পূর্ণ আত্মিক সত্তার বাস্তবায়ন। আমি লেখালেখির জন্য তাই আলাদা সময় ভাগ করে নেই না। মনের ওপর সম্পূর্ণ ছেড়ে দেই। যেহেতু লেখালেখিটাকে শখ হিসেবে দেখি পেশা হিসেবে না। তাই বলা যেতে পারে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতের ঘুমন্ত সত্তায় প্রবেশের আগ পর্যন্ত আমি লেখালেখি করি যখন মন চায়।
আপনার ইচ্ছার কী?
ইচ্ছা শব্দের সঙ্গে তেমন একটা ভাব নেই আমার। তবুও মানুষ যতদিন পৃথিবীতে বাঁচে ততদিনই কিছু না কিছু ইচ্ছে মনে পোষণ করেই। তাই আমার ইচ্ছে পৃথিবীর সব দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ, রাগ-অভিমান, চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে থেকে মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে, সবাইকে ভালোবেসে একসঙ্গে পৃথিবীর পথে হাঁটতে।
জীবনে কী নিয়ে বেঁচে থাকতে চান?
জীবনে বেঁচে থাকতে তিনটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- ১। ভালোবাসা ২। ইচ্ছে শক্তি ৩। অপ্রাপ্তির মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়া।
আপনার জীবন দর্শনের কথা বলবেন কী?
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’ একজন মানুষ বাঁচে যখন তার মন বাঁচতে শেখে। আর মন বাঁচে যখন সুখ পাখি তার ভেতর বাসা বাঁধতে থাকে। তবে গতানুগতিক ধারায় সাময়িকতার মাঝে সুখ পাখি খুঁজে পাবার চেয়ে অদূর ভবিষ্যতের সুখ পাখি খুঁজতে যাওয়ার মজাটা আসলেই ভিন্ন। সেই খুঁজে পাবার তাড়না আমার মতে, মানুষকে হয়ত অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করবে নিজেকে খুঁজে পেতে। তাই বলে সাময়িকতাকে বাদ দিব না, তাকে সময়ের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করব এবং ভালোবাসার অন্তর্নিহিত সত্তায় বিশ্বাস করব।
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/সা/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৪)