দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাসে তীব্র গরমের মধ্যে সারাদিন সিয়াম সাধনার পর আমরা অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানিয়ের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়ি। একবারও ভাবি না যা খাচ্ছি তা শরীরের জন্য উপকারী কি না। ইফতারির তালিকায় থাকা উচিত ভিটামিন ‘সি’যুক্ত তরল, সহজপাচ্য আঁশযুক্ত খাবার। এই অসহনীয় গরমে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা অভুক্ত থেকে ভাজাপোড়া খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়া বুদ্ধিমানের কাজ নয় নিশ্চয়ই? মাথায় রাখতে হবে, এই গরম আর লম্বা দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার।

তরল খাবারের তালিকায় আপনার জন্য থাকতে পারে তেঁতুলের শরবত, যা আপনার পুষ্টি চাহিদা মিটাবে। এবার জেনে নিই তেঁতুলের বিশেষ উপকারিতা সম্পকে।

* কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় : আমাদের দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমিয়ে এনে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের যত্ন নেয় তেঁতুল। কারণ এতে রয়েছে ফেনোল আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। উপকারী কোলেস্টেরলের (এইচডিএল) পরিমাণ বাড়াতেও ভালো জানে এই ফল।

* হজমে সহায়তা : পেটের সমস্যা নিরাময়ে বেশ কাজে দেয় তেঁতুল। দুই চা চামচ তেঁতুলের পেস্ট পানিতে গুলিয়ে খেলে আরাম লাপাওয়া যাবে। এর ভক্ষণযোগ্য ফাইবার বর্জ্য তৈরি ও অপসারণে ভূমিকা রাখে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আয়ুর্বেদের অন্যতম উপকরণ তেঁতুল।

* চায়ের সঙ্গে : জ্বর ও শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসার মতো সমস্যায় ভেষজ চা বেশ উপকারী। এই চা আবার ভালো প্রতিষেধক হয়ে যাবে, যদি এর সঙ্গে তেঁতুলের পাতা মেশানো যায়।

* ভিটামিন হিসেবে : ভিটামিন ‘সি’-এর অভাবে দেহে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তেঁতুল সেসবের বিরুদ্ধে ভালোই লড়াই করতে জানে।

* আলসারের সমস্যায় : তেঁতুলের শরবতে একটু পুদিনা পাতা মেশালে তা মুখের আলসার দূর করতে দারুণ কাজে দেয়। গরম ও ঝাল উপাদানে যখন আলসারে প্রদাহের সৃষ্টি হয়, তেঁতুল তখন তাকে শীতল করে।

* রক্ত লোহিত কণিকা গঠনে : রক্তের লোহিত কণিকা গঠনে এবং স্বাস্থ্যকর কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য বেশ উপকারী তেঁতুল। কারণ এটি খনিজ ও ভিটামিনে ঠাসা।

* ফাইবার- : ট্যানিন্স, মুসিলেজ ও পেক্টিনের মতো খাবারযোগ্য ফাইবারে পূর্ণ তেঁতুল। এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ১০০ গ্রাম তেঁতুলের পেস্ট প্রতিদিনের জরুরি ১৩-১৫ শতাংশ ফাইবারের চাহিদা পূরণ করে।

* ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : দেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে এমন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের বিরুদ্ধে কাজ করে তেঁতুলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ ছাড়া থাইরয়েডের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের খাদ্যতালিকায় তেঁতুল রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

* ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে এনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পটু তেঁতুল। এ রোগ সামাল দিতে দীর্ঘদিন ধরে হারবাল উপাদান এবং জামের সঙ্গে তেঁতুল অন্যতম মন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

* অ্যান্টিডোট হিসেবে : অ্যালকোহল বা বিষক্রিয়ায় আক্রান্তদের তেঁতুলের শরবত দিলে এর প্রভাব খুব দ্রুত কেটে যায়। এ ক্ষেত্রে তেঁতুল পুরোপুরি অ্যান্টিডোট হিসেবে কাজ করে।

* স্নায়ুতন্ত্রের জন্য : এতে আছে অতি জরুরি ভিটামিন ‘বি কমপ্লেক্স’। পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থিয়ামিন। স্নায়ুতন্ত্রের সুষ্ঠু কর্মকাণ্ডের জন্য থিয়ামিনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকাযর্, যা প্রচুর পরিমাণে তেঁতুলে রয়েছে।

আমরা এই রমজানে আল্লাহর অশেষ নিয়ামতের একটি এই তেঁতুলের শরবত খেয়ে পেতে পারি হজমে সহায়তা, পেতে পারি গরমে প্রশান্তি।

(দ্য রিপোটর্/একেএ/এনআই/জুন ১০, ২০১৭)