বিশেষ প্রতিনিধি : ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তা পরিশোধ না করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রামের চার শিল্পপতির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মুজিবুর রহমানের আদালতে মঙ্গলবার বিকেলে এ চার্জ গঠন করা হয়। আগামী ১০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তারা হলেন- নূরজাহান গ্রুপের মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহম্মদ, তার ভাই একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও মেসার্স জাসমিয়া ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান। এসএ গ্রুপের সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাব উদ্দিন আলম ও তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আলম।

এর আগে ওই চার শিল্পপতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন একই আদালত। এর একদিন পর (১৯ ফেব্রুয়ারি) আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তারা।

নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা শিল্প এলাকায় নূরজাহান গ্রুপে মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে কমার্স ব্যাংক থেকে ৫৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। এ ঋণ পরিশোধের অংশ হিসেবে ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার বিপরীতে পাঁচ কোটি টাকার একটি চেক দেওয়া হয়। একই দিন চেকের বিপরীতে কমার্স ব্যাংকের পক্ষ থেকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে ‘অপর্যাপ্ত তহবিল’ থাকায় চেক ডিজর্নার হয়।

এরপর কয়েক দফা লিগ্যাল নোটিশ দিয়েও ঋণগ্রহীতার সাড়া না পেয়ে কমার্স ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় জহির আহম্মদ ও তার ভাই টিপু সুলতানকে আসামি করা হয়।

এদিকে নগরীর আগ্রাবাদ ফিনলে হাউসের ঠিকানায় এসএ গ্রুপের সুপার অয়েল লিমিটেডের নামে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধের জন্য সুপার অয়েলের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালের ২১ মে অগ্রণী ব্যাংককে তিনটি চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে কমার্স ব্যাংকের অনুকূলে চার কোটি ৫০ লাখ পাঁচ হাজার টাকা ও ২০ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার দুটি এবং ঢাকা ব্যাংকের অনুকূলে ৪৯ কোটি ১০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়। ‘অপর্যাপ্ত তহবিল’ থাকায় চেকগুলো ডিজর্নার হয়।

পরবর্তী সময়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের জানানো হলেও এবং দুই দফায় লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এরপর ২০১৩ সালের ৪ জুলাই অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার সিনিয়র অফিসার সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ও ১৪০ ধারায় মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহাব উদ্দিন আলম ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন আলমকে অভিযুক্ত করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএইচ/এমএআর/সা/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৪)