বরিশাল প্রতিনিধি : জেলার উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারেখা গ্রামের কিশোরী রোকসানা আক্তারকে অপহরণ, ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-সহ পৃথক দণ্ডাদেশ ও জরিমানা করেছে আদালত। বুধবার দুপুরে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক শেখ আবু তাহের আসামী স্বপনের উপস্থিতিতে এবং অপর ৫ আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অপহরণ মামলায় স্বপন হাওলাদারকে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, হত্যা মামলায় স্বপন হাওলাদার, সমীর হাওলাদার ও গৌরাঙ্গ বৈরাগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং লাশ গুম করার অপরাধে ওই ৩ আসামির প্রত্যেককে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার ৩ আসামিকে বেকসুর খালাশ দিয়েছেন আদালত। এরা হলেন স্বপনের বাবা রফিকউদ্দিন হাওলাদার, রফিকের ভাই মোকসেদ হাওলাদার এবং স্থানীয় বাসিন্দা সফিজউদ্দিন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান নথির বরাত দিয়ে জানান, গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকায় রোকসানা আক্তার উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামে নানিবাড়ি বেড়াতে যায়। ২০০০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পর নানিবাড়িতে অন্যান্যদের সাথে ভিসিআর দেখছিলো রোকসানা। ভাত খেতে ডাকার অজুহাতে নিকটআত্মীয় স্বপন তাকে ডেকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে স্বপন এবং তার দুই সহযোগী সমীর ও গৌরাঙ্গ তাকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে এবং পার্শ্ববর্তী অতুল হালদারের বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকিতে ফেলে দেয়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির পর অতুল হালদারের বাড়ির টয়লের স্লাব এলোমেলো দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। এরপরও টয়লেটের স্লাব তুলে ট্যাংকির ভেতর থেকে রোকসানার লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় ১৬ মার্চ রোকসানার বড় ভাই লালন ফকির বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগে উজিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার এসআই আব্দুল হাকিম ২০০৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ৬ জনকে অভিযুক্ত আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। বিচারক ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উল্লেখিত রায় প্রদান করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/জুন ১৪, ২০১৭)