খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির রামগড় ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় পৃথত পাহাড় ধসে ৩ শিশুর মৃত্যু ও দু’জন আহত হয়েছে। রবিবার ভোররাতে প্রবল বর্ষণের সময় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পাহাড় ধসে রামগড় উপজেলায় ২০টির মতো ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া লক্ষ্মীছড়ি ও গুইমারা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বর্ষণ ও পাহাড়ধস অব্যাহত থাকায় জেলায় ৫টি আশ্রয়শিবির খুলেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

রামগড় উপজেলার বুদংপাড়ার বাসিন্দা মো. মোস্তফা জানান, রবিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তার বসতবাড়ির উপর একটি বিশাল পাহাড় ধসে পড়ে। এতে তার মো. নুরনবী (১৪) ও মো. হোসেন (১০) নামে দুই সহোদর নিহত ও বিল্লাল হোসেন আহত হয়েছেন।

জাহেদুর নেছা জানান, ভোররাতে প্রবল বর্ষণের সময় বাড়ির পূর্ব পাশের পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়ে একই বিছানায় ঘুমন্তাবস্থায় তার দুই ছেলে মারা যান।

নিহতদের চাচা জানান, ঘটনার পর প্রায় দুইঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুই সহোদরের লাশ উদ্বার করতে সক্ষম হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে মাটিচাপায় নিখোঁজ গবাদিপশুর সন্ধান চালায়। নিহতদের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা সাহায্য করা হয়।

অন্যদিকে, রবিবার সকাল ৮টায় লক্ষ্মীছড়ির যতীন্দ্র কার্বারীপাড়া এলাকায় পাহাড়ধসে নিপুণ চাকমা (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। সে একই এলাকার দেবব্রত চাকমার মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা।

এদিকে প্রবল বর্ষণে গুইমারা ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকলে আরও ভূমিধসের আশঙ্কার কারণে শহরের আলুটিলায় বুলডোজার দিয়ে পাহাড় কাটতে দেখা গেছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে জেলা সদর, মহালছড়ি, মানিকছড়ি ও রামগড়ে ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মাইকিং করে ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ি সনাক্ত করে তাদের উদ্বুদ্ধ করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮০টির মতো পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। তাদের খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও নিরাপত্তার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এবছর পাহাড়ধস ও প্রবল বর্ষণ অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে উল্লেখ করে ডিসি ভূতাত্ত্বিকদের সমন্বয়ে পাহাড়ের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য জরিপ করে নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব দেন।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/জুন ১৮, ২০১৭)