হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : অতি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপদ সীমার ২৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। ইতোমধ্যে শহরের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) সকাল পর্যন্ত পানি বাড়ার ফলে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। শহরের কামড়াপুর ব্রীজ, মাছুলিয়া ও তেতৈয়া ব্রীজ পয়েন্ট ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে হাজার হাজার বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

এদিকে খোয়াই নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে হবিগঞ্জ শহরবাসী। কেউ কেউ আবার ভাঙ্গন আতঙ্কে বাসা বাড়ি থেকে মালামালও সরিয়ে নিচ্ছে। রাতে ব্যবসায়ীদের দোকানের মালামালও সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার ২ তলা কিংবা ৩ তলায় মালামাল তুলে রেখেছেন।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাধগুলোতে প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে পানি প্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে জানান, ভারতের বাল্লা সীমান্তে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহারি ঢলে খোয়াই নদীর পানি দ্রুত গতিতে বেড়ে বিপদ সীমার ২৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

রাতে শহরের মাছুলিয়া পশ্চিম দিকে হাওরে ভাঙ্গনের চেষ্টা করা হলে এলাকার লোকজন দেশীয় অস্ত্রহাতে রাত জেগে বাধ পাহাড়া দেয়। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে।

বাঁধ অতি ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই সকলকে সতর্ক থাকা জরুরি। প্রশাসন বাঁধ রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম।

এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় শহরের কামরাপুর দিয়ে খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে শহরে পানি ডুকছে এমন গুজব ছড়িয়ে পরায় শহরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। কর্মক্ষেত্রের সকল মানুষ ভয়ে নিজ নিজ বাসায় ছুটতে থাকেন।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমএল সৈকত দ্য রিপোর্টকে জানান, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাঁধ অতি ঝুঁকিপূর্ণ, তবে এখনও ভাঙ্গেনি। সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। তবে কোন দিক দিয়ে নদীর পানি বের করে দেওয়া যায় তার অনুসন্ধান চলছে। আশা করছি শিগগিরই এর সমাধান হবে।

তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নদীর বাঁধ ঘুরে দেখছেন। যেসব স্থানে ত্রুটি বা ভাঙনের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে, সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

এছাড়াও যে কোনও প্রস্তুতির জন্য ১০ হাজার বালুর বস্তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান প্রকৌশলী সৈকত।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/কেএনইউ/এনআই/জুন ২০, ২০১৭)