বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে উঠছে ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব
জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে উঠছে বাংলাদেশের জন্য প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব। রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশন ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন নামের প্রকল্প বাস্তবায়নে এ টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় এ ঋন প্রস্তাবটি অনুমোদন হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিস।
ঢাকায় নিযুক্ত সংস্থাটির যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্য রিপোর্টকে জানান, ‘সম্প্রতি আমরা এ ঋণের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় বোর্ড সভায় এটি অনুমোদন দেয়া হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে পাস হওয়ার পাশাপাশি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলেই ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করা হবে বলে আশা করছি।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের ঋণের অর্থে গৃহীত রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশন ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পটির মাধ্যমে মূলত গ্রামীণ এলাকার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হবে। তাছাড়া বর্তমান যে সব বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে সেগুলো অনেক পুরনো। লোড নিতে সক্ষম নয়। সেগুলোরও উন্নয়ন করা হবে। সহজ শর্তে এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরে সরকারকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর সার্ভিসচার্জ ধরা হয়েছে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।
বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমাতে বিশ্বব্যাংকের এটি উল্লেখযোগ্য অর্থায়ন বলে মনে করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইআরডি বলছে, এটি পদ্মা সেতুর পরই একক প্রকল্পে সর্বোচ্চ অর্থায়ন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন বাড়ছে না। পুরনো লাইনে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ নষ্ট হচ্ছে সিস্টেম লসের কারণে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাংক একক প্রকল্প হিসেবে সর্বোচ্চ অর্থায়ন করছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল ও বিজিসিপির নিজস্ব তহবিল মিলিয়ে মোট ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের দেয়া মোট ঋণের মধ্যে বিজিসিপি ব্যয় করবে প্রায় ৮৪৮ কোটি টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ব্যয় করবে প্রায় ৩ হাজার ৮৮০ কোটি এবং বাকি ৭২ কোটি টাকা কারিগরি সহায়তা হিসেবে ব্যয় করা হবে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমার পাশাপাশি নতুন গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়া যাবে।
(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪)