সেলিম আহমেদ, মৌলভীবাজার : এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরপাড়ের কুলাউড়া, জুড়ী ও  বড়লেখায় বন্যা পরিস্থিতি ফের অবনতি হয়েছে। গত কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক ঘন্টার ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। ফলে, আবারও বাড়িঘর রাস্তাঘাট ডুবতে শুরু করেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রামের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, উপসনালয় এখনও পানির নিচে, মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ। সবমিলিয়ে জেলার কুলাউড়া, জুড়ীর ও বড়লেখা উপজেলার ২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩০০ মানুষ চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছে। ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার অনেকেই গিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্র এবং আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে। হাওর এলাকার কৃষি ও মৎস্যজীবী মানুষ কর্মহীন থাকায়, নেই আয় রোজগারও। যারা নিজ বাড়িতে রয়েছেন, পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের এখন অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। গো-খাদ্যের পাশাপাশি গবাদি পশু রাখার জায়গা নিয়েও তারা পড়েছেন সংকটে।

বড়লেখার তালিমপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস ও কুলাউড়ার ভুকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, গত কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। বুধবার ও বৃহস্পতিবারের বৃষ্ঠিতে হাওওে প্রায় ৫-৬ ইঞ্চি পানি বেড়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন বাড়ি ফিরতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ফের ভারী বৃষ্টিতে পানি বাড়ায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের বাড়ি ফেরা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে জনদুর্ভোগও বাড়ছে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সে. মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানি কমতে পারছে না। তবে আশা যাচ্ছে দু’একদিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/জুলাই ১৪, ২০১৭)