‘হামের কারণে মৃত্যু’
সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর মৃত্যুতে সরকারের দুঃখ প্রকাশ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পাড়ায় শিশুরা কখনোই টিকার আওতায় আসেনি। কিছুদিন আগে দুর্গম ওই এলাকায় ৯ শিশুর মৃত্যুর কারণ হিসেবে হামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
সোমবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে শিশুমৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।তিনি জানিয়েছেন, হামের কারণে ত্রিপুরা পাড়ায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে সারা দেশে হাম ছড়িয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
ত্রিপুরা পাড়ায় বর্তমানে ৮৫টি পরিবারের বসবাস। কয়েক দশকেও এই পরিবারগুলোর কাছে টিকা পৌঁছে দিতে না পারায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে দুঃখও প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। দেশের ভেতরে একটি এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম না থাকার কারণে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর দায় স্বীকার করছে কিনা জানতে চাইলে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘এ ঘটনায় আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি’ ।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরো বলেছেন, ‘দেশে হামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এটি (ত্রিপুরা পাড়া) একটি ছোট বিচ্ছিন্ন এলাকা এবং তারা কখনোই আধুনিক চিকিৎসা নেয়নি।’ আধুনিক চিকিৎসা নিলে হয়ত এ প্রাণহানি ঠেকানো যেত বলে মনে করেন তিনি।
স্বাধীনতার এতবছর পরেও কেন এবং কাদের অবহেলায় টিকাদান কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘এজন্য আমরা একটি তদন্ত কমিটি করেছি, তারা প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে সেটি এখনও পড়ে দেখার সুযোগ হয়নি।’ তবে আগামী সাতদিনের মধ্যে সে প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করবেন বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
গত মাসের শেষ দিক থেকে বারআউলিয়ার সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পাড়ার শিশুদের মধ্যে জ্বর, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনির মতো উপসর্গ দেখা দেওয়া শুরু করে। কিন্তু অভিভাবকরা হাসপাতালে না যাওয়ায় চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে গত বুধবার পর্যন্ত নয় শিশুর মৃত্যুর পর। পরে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আরো ৪৬ জনকে।
তাৎক্ষণিকভাবে এ রোগকে‘অজ্ঞাত’হিসেবে দেখা হয়। এ রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কর্মকর্তারা ওই এলাকায় যান। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ‘শিশুরা দীর্ঘদিনের অপুষ্টির কারণে এক ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে’বলে জানিয়েছিলেন আইইডিসিআর’র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/জুলাই ১৭, ২০১৭)