বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দারবানে পাহাড় ধসের ঘটনায় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই তরুণীর নাম চিংমে হ্লা (১৮) বলে জানা গেছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায় নি। এ ছাড়া পাহাড় ধসের এ ঘটনায় এখনো আরও ৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা অব্যহত রেখেছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

 

নিখোঁজ রয়েছে ৪ জন হলেন-রুমা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিস সহকারী মুন্নি বড়ুয়া, কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা গৌতম নন্দী, ডাক বিভাগের কর্মচারী মো. রবিউল এবং উমেচিং মারমা নামের এক তরুণী।

 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় উদ্ধার তৎপরতা চলাচ্ছিল সেনাবাহিনী ও ফায়ারসার্ভিস।

 

ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. যোবায়ের সালেহীন, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তরা।

 

 

টানা ভারী বর্ষণে বান্দরবানে রুমা সড়কের দলিয়ান পাড়া এলাকায় রবিবার (২৩ জুলাই) সকাল ১১টায় এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে বান্দরবান হাসপাতালে ভর্তি করে। উদ্ধার হওয়া তিনজন হলেন- রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বেলাল হোসেন, শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা এবং স্থানীয় বাসিন্দার অংথোয়াই চিং।

প্রশাসন, আইন-শৃ্ঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান থেকে রুমা উপজেলার উদ্দেশ্যে এবং রুমা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ২টি যাত্রীবাহী বাস পাহাড় ধসে পড়া বিধ্বস্ত রুমা সড়কের দলিয়ান পাড়া এলাকায় পৌঁছায়। দু’পাশের যাত্রীরা বাস পরিবর্তনের জন্য ভাঙ্গা রাস্তায় পায়ে হেঁটে পার হওয়ার সময় বৃষ্টিতে আবারও পাহাড় ধসে পড়ে। এ সময় পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে অনেক যাত্রীরা। আহত অবস্থায় ৩ যাত্রীকে শ্রমিকেরা জীবিত উদ্ধার করেছে। তবে এখনো ৫ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এবং স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারের তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

বান্দরবানের মৃত্তিকা সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে ৭৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখনো ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

পরিবহন শ্রমিক স্বপন দাস দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত মাসের ১২ জুন অবিরাম বর্ষণে বান্দরবান-রুমা উপজেলা সড়কের দলিয়ান পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেনাবাহিনী কয়েকদফায় পাহাড়ের মাটি সরানোর চেষ্টা করলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পারেনি। তবে সড়কের দু’পাশে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বিধ্বস্ত ভাঙ্গা সড়ক পায়ে হেঁটে যাত্রীরা গাড়ী পরিবর্তন চলাচল করে আসছিল। রবিবার সকালেও যাত্রীরা পায়ে হেঁটে গাড়ী পরিবর্তন করতে যাওয়ার সময় পাহাড় ধসে অনেক যাত্রী মাটি চাপা পড়েন।

(দ্য রিপোর্ট/কেএনইউ/এআরই/এজে/জেডটি/জুলাই ২৩, ২০১৭)