দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র গঠনতন্ত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) আনা সংশোধনী অবৈধ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

আদালত বলেছেন, গঠনতন্ত্র সংশোধনের যে ক্ষমতা সেটি বিসিবির হাতেই থাকবে। এনএসসি সে গঠনতন্ত্র তাদের জন্য সংশোধন করে দিতে পারবে না। সুতরাং এই গঠনতন্ত্র সংশোধনের ক্ষমতা বিসিবির হাতে থাকবে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার (২৬ জুলাই) এ রায় দেন।

আদালতে এনএসসির পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

বিসিবির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক বলেন, ‘আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ বলেছেন- গঠনতন্ত্র সংশোধনের যে ক্ষমতা সেটি বিসিবির হাতেই থাকবে। এনএসসি সে গঠনতন্ত্র তাদের (বিসিবি) জন্য সংশোধন করে দিতে পারবে না। এতে বিসিবি আরও স্বায়ত্তশাসিত হবে, সংঘবদ্ধ হবে শক্তিশালী হবে। ক্রিকেট এবং ক্রিকেট বোর্ড দুটিই শক্তিশালী হবে। ভবিষ্যতে ক্রিকেটের উন্নতি হবে।’

তিনি বলেন, ‘আদালত আরও বলেছেন-আগামী পাঁচ বছরে ক্রিকেট বিশ্বক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তার জন্য বিসিবি এবং বাংলাদেশকে এখনো প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন। এই জন্য বিসিবিকে শক্তিশালী করতে হবে। গঠনতন্ত্রে সংশোধন বিয়োজন করবে কেবল বিসিবি। অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

২০১২ সালের নভেম্বরে বিসিবির গঠনতন্ত্রের সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বিসিবির সাবেক পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোবাশ্বের হোসেন এবং বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সভাপতি ইউসুফ জামিল বাবু। এ রিটের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর আদালত রুল জারি করেন ও সংশোধনীর ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি রোববার আদালত সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন।

রিটকারীদের দাবি ছিলো, ‘বিসিবির গঠনতন্ত্রে ২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য সাধারণ পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদন নিতে হবে। বিসিবি ২০১২ সালের ১ মার্চ বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম)’র মাধ্যমে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পাঠায়। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবি সাধারণ পরিষদের সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে নিজেদের মনগড়া সংশোধনী আনে। যা গঠনতন্ত্রের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যেভাবে অবৈধ উপায়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছে তা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ১৯৭৪ এর ২০ এর (ক) ধারার পরিপন্থি। ক্রীড়া পরিষদ মডেল গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে পারে কিন্তু বিসিবির এজিএমে অনুমোদিত গঠনতন্ত্র সংশোধনের ক্ষমতা রাখে না।’

পরে হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতির কোর্টে আবেদন করে এনএসসি ও বিসিবি। এরপর চেম্বার জজ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। একইসঙ্গে লিভ টু আপিল করতে বলেন। ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই আদালত তাদেরকে আপিলের অনুমতি দেন ।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এআরই/এনআই/জুলাই ২৬, ২০১৭)