দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অস্বাভাবিক বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

গতকাল (বুধবার) সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছিলেন, সামনের বছর জলাবদ্ধতার এই পরিস্থিতি হবে না। একথাটির পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, যদি হঠাৎ খুব বেশি বৃষ্টি হয়ও তাহলে ৩ ঘণ্টার মধ্যে পানি নিষ্কাশন করে দিতে পারব।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই ‘ঢাকা পানি সম্মেলন-২০১৭’ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আগামী বছরে এমন পরিস্থিতি হবে না এমন বক্তব্যের রেশ ধরে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অনেকেই এটাকে অন্যরকমভাবে চিন্তা করতেছেন। আমার এটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন কিনা। আমি পলিটিক্স করি সত্যিকথা, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না। কিন্ত এর বাইরে আমি তো একজন প্রকৌশলও। এ বিষয়ে এক্সপার্ট। কথাটা তো আমি না বুঝে বলিনি। এটিকে অন্যভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রস্তুতি আছেই বলে আগামী বছর এ ধরনের সমস্যা থাকবে না।

ঢাকায় জলাবদ্ধতা আগামীতে হবে না বলে এর আগেও বলা হয়েছিল, কিন্তু এবারও তো তার পুনরাবৃত্তি হলো, এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের উপর তো আমাদের হাত নাই। ওই পরিপ্রেক্ষিতে তখন কথা বলেছিলাম, যদি নরমাল পানি থাকতো তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতি হতো না। এটা (অতিবৃষ্টি) প্রতি ১০ বছরে একবার রিপিট হয়। আমরা এর পুনরাবৃত্তি আর হতে দেব না। এবার এক্সট্রা পানির যে চাপটা, যে চাপে সারা শহর বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ধরনের বৃষ্টি সামনের বছর হলেও পানি থাকবে তবে এই ধরনের চাপ থাকবে না।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমি নিজেই ঢাকায় বসবাস করি। এ ধরনের বৃষ্টি, প্রতি ঘণ্টায় যদি ৪০-৫০ মিলি মিটার বৃষ্টি হয় তাহলে সেটির ড্রেন (নিষ্কাশন) সিটি করপোরেশনের আছে। এর অতিরিক্ত বৃষ্টি হলেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উপর অন্য রকম চাপ পড়ে।আর এবারকার চাপটা ছিল অন্যরকম। নদীতে যে পানি নিষ্কাশন করে দেব সে ব্যবস্থাও ছিল না, কারণ নদীর লেভেলও উপরে ছিল, বাঁধ ছিল। একটা রিস্ক ছিল যদি নদী সংলগ্ন ড্রেন খুলে দেই তাহলে আরো ব্যাপক দুর্যোগের মধ্যে পড়ার আশঙ্কা ছিল। পানিটা নিষ্কাশন করতে হয়েছে পাম্পিং করে। এই অস্বাভাবিক বৃষ্টির জন্য আমরা আসলেই প্রস্তুতি সেরকম ছিল না। এখন আমাদের প্রস্তুতি আছে। অলরেডি প্লানিং কমিশনে পানি নিষ্কাশনে দুইটি প্রজেক্ট জমা আছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি এই প্রজেক্টগুলো পাশ করার ব্যবস্থা নেব। প্লানিং কমিশনও এই সমস্যাটা দেখছে। যতদ্রুত সম্ভম এ ব্যাপারটি ড্রিল করবো।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হয়নি-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, করতে পারিনি হয়নি। আমরা এটার গুরুত্ব বুঝি নাই। কারণ আমাদের অতীতে এই ধরনের পরিস্থিতি কখনো হয় নাই। এবার হয়েছে, আমরা আরও সতর্ক হয়ে গেছি।

২৯ ও ৩০ জুলাই ‘ঢাকা পানি সম্মেলন-২০১৭’

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দুই দিনব্যাপী ২৯ ও ৩০ জুলাই ‘ঢাকা পানি সম্মেলন-২০১৭’ অনুষ্ঠিত হবে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও ডেল্টা কোয়ালিশনভুক্ত, অঞ্চলের ২৭টি দেশকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগ দুই দিনব্যাপী ‘ঢাকা পানি সম্মেলন-২০১৭’ আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এআরই/এনআই/জুলাই ২৭, ২০১৭)