দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আদালতের রায়ে অযোগ্য হয়ে পদত্যাগ করা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তার ভাই শাহবাজ শরিফ। যিনি বর্তমানে নওয়াজের নিজ প্রদেশ পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পাকিস্তানের জিও টেলিভিশনের সংবাদে বলা হয়, পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নওয়াজ শরিফ তার দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) এর জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে নওয়াজ তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ভাই শাহবাজের কথা প্রস্তাব করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

ক্ষমতাসীন দল পিএমএল-এন এর সভাপতি হিসেবে নওয়াজ তার ভাইয়ের নাম সুপারিশ করেন। তবে তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। দায়িত্ব গ্রহণ করলেও শাহবাজকে ৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। শাহবাজ জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। 

নওয়াজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলে হামজা শাহবাজ শরিফ অথবা রানা সানাউল্লাহ পাঞ্জাবের মূখ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির জেরে শুক্রবার নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের পর নওয়াজ পদত্যাগ করেছেন। পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠে।

ওই অভিযোগের তদন্তকারী যৌথ তদন্ত দলের (জেআইটি) প্রতিবেদনে বলা হয়, নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎস জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত এই রায় দেন। নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অবশ্য নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তদন্তের শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন।

গত বছর পানামাভিত্তিক আইনি সেবাপ্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার ১ কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি প্রকাশ করে। তাতে বিশ্বের বহু ক্ষমতাধর, ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ সামনে আসে। এতেই নওয়াজ এবং তাঁর চার ছেলেমেয়ের মধ্যে তিনজনের নাম আসে।

নওয়াজের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, এটা নওয়াজকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র। ২০১৩ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ। এর আগের দুইবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি তিনি। এর মধ্যে একবার সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান নওয়াজ।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/জুলাই ২৮, ২০১৭)