রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল থেকে শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হলের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জিহাদী বই-শিবিরের নথি, দুটি কম্পিউটারসহ নগদ ১৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

আটকৃতরা হলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুল হাসান নাফিস, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ, বোটানি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান, পরিসংখ্যান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম, জোহা হল শাখা শিবিরের সেক্রেটারি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন, পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহানুর আলম হিমেল, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাহেব রানা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাকিব, আরবি সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের নাবিউল ইসলাম, একই বিভাগের মাস্টার্সের অলিউল ইসলাম ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বানী।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু রাত ১২টার দিকে হলের ১৪৩ নম্বর কক্ষে সাহেব রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কাছে শিবিরের বিভিন্ন তথ্য, ডকুমেন্ট ও ক্রেস্ট পাওয়ার পর তার দেওয়া তথ্য অনুসারে হলের ১৪৮, ১৫৫, ১৫০, ২৪৯, ২৫৪, ২৭৬, ৩৫৮, ৩৬০ ও ৩৬২ নম্বর কক্ষে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে বিভিন্ন জিহাদী বই ও শিবিরের রিপোর্ট বই, ডায়েরি, অর্থ বিভাগের ১৯ হাজার টাকা ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতকর্মীর তালিকাসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট পাওয়া যায়।

এছাড়াও অভিযানের সময় তাদের বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ভোর ৪টার সময় মতিহার থানা পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। এ সময় সমস্ত ডকুমেন্ট পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘গোয়েন্দা ও প্রশাসনে কাছ থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সোহরাওয়ার্দী হলের সাহেব রানা ও নাবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিবিরের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা হলের বেশ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে শিবির হিসেবে আটক করি এবং এক জনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সিলেটে দুই ছাত্রলীগ নেতার উপর শিবিরের হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য আমরা এ অভিযান চালিয়েছি। দেশকে ধ্বংস করার জন্য তারা যে পায়তারা করছে তা কখনও বাস্তবায়িত হতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।’

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব হোসেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘অভিযান চালানোর সময় আমরা হলে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু হল প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় আমরা অভিযানে অংশ নেইনি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ১২ জন শিবিরে নেতাকর্মীকে আটক করে আমাদের হাতে সোপর্দ করেছে। অধিকাংশই শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আমরা তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/কেএনইউ/আগস্ট ০৯, ২০১৭)