রক্তাক্ত ২১ আগস্ট আজ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আজ রক্তাক্ত ২১ আগস্ট। ১৩ বছর আগে ২০০৪ সালের এই দিন বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২২ জন। আহত হন আরও শতাধিক।
প্রতিবছরের মত এবারও দিনটি উপলক্ষে কর্মসূচী পারন করবে আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কর্মসূচীতে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা এবং তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে ২১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ। বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খোলা ট্রাকের ওপর স্থাপিত উন্মুক্ত মঞ্চে বক্তৃতা করছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিকেল তখন ৫টা ২২ মিনিট। বক্তব্য শেষ করে শেখ হাসিনা যখন সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করবেন, ঠিক সেই মুহূর্তে গ্রেনেড বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও এর আশপাশের এলাকা। চারদিক থেকে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে সভাস্থলে। মুহূর্তের মধ্যে শান্তি সমাবেশ রক্তস্রোতে ভেসে যায়। সমাবেশস্থল পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। শত শত মানুষের চিৎকার, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা ছিন্নভিন্ন দেহ, রক্ত আর বারুদের পোড়া গন্ধে বীভৎস এক নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা সেই গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রিয় নেতাকে বাঁচাতে মরিয়া নেতাকর্মীরা দ্রুত তাকে গাড়িতে তুলে দেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তার পিছু ছাড়েনি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে বের হওয়ার পথে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বুলেটপ্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িতেও ঘাতকরা অবিরাম গুলিবর্ষণ করে।
অন্যদিকে গ্রেনেড হামলায় ২১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আইভি রহমান সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতরা হলেন- মোস্তাক আহমেদ সেন্টু, ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, রফিকুল ইসলাম আদা চাচা, সুফিয়া বেগম, হাসিনা মমতাজ রীনা, লিটন মুন্সী ওরফে লিটু, রতন সিকদার, মো. হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মামুন মৃধা, বেলাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আতিক সরকার, নাসিরউদ্দিন সরদার, রেজিয়া বেগম, আবুল কাসেম, জাহেদ আলী, মমিন আলী, শামসুদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, ইছহাক মিয়া এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুজন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/আগস্ট ২১, ২০১৭)