সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কারখানা অনুমোদনে নিষেধাজ্ঞা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের আশপাশের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন শিল্প-কারখানা অনুমোদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।
ওই ১০ কিলোমিটার ব্যসের মধ্যে কতগুলো শিল্প-কারখানা বর্তমানে রয়েছে তার তালিকা ছয় মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
আইনজীবী জাকির পরে সাংবাদিকদের বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর সম্প্রতি সুন্দরবনের পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায়, অর্থাৎ ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কমবেশি ১৫০টি ছোটোবড় শিল্প কারখানা বা প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প করার অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
এসব শিল্পকারাখানা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ‘সেইভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের’ সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম গত ১২ এপ্রিল হাই কোর্টে একটি রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়েই আদালত রুলসহ আদেশ দিয়েছে বলে জানান জাকির।
সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমোদন কেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্টের প্রজ্ঞাপনের লঙ্ঘন হবে না এবং নতুন শিল্প কারখানা কেন অপসারণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
পরিবেশ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সুন্দরবনের আশে-পাশের জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৯৯ সাল এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এর ৫ ধারার (১) ও (৪) উপধারার ধারার ক্ষমতাবলে সংরক্ষিত এ এলাকাকে পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে।
‘এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুন্দরবনের এ ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি, পানি, বায়ু ও শব্দ দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু গণমাধ্যমে খবর এসেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প করার জন্য অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে। যার মধ্যে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পসহ পরিবেশ দূষণকারী প্রকল্প রয়েছে।’
এসব শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদ ও পরিবেশ আইন ১৯৯৫-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে দাবি করা হয় রিট আবেদনে।
(দ্য রিপোর্ট/এআরই/আগস্ট ২৪, ২০১৭)