ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে এসেছি: রোহিঙ্গা নারী
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পের পাশের রাস্তা জুড়ে জড়ো হয়েছে শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী। দলে দলে ভাগ হয়ে বসে থাকা এই শরণার্থীদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। সেই দলে কোন পুরুষ নেই। প্রায় প্রতিটি নারীর কোলেই বাচ্চা। খবর- বিবিসির।
পরিবারের পুরুষ সদস্যরা তাদের সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আবার মিয়ানমারে ফিরে গেছে। গ্রামের মানুষ যখন দল বেঁধে পালাচ্ছিল, তখন তাদের সঙ্গে চলে আসে এই তরুণীরা। এরপর থেকে স্বামীর সঙ্গে তাদের আর কোন যোগাযোগ নেই।
একজন রোহিঙ্গা নারী জানিয়েছেন, তার ১৪ বছরের ছেলেকে তিনি বিদায় জানিয়ে এসেছেন।
"আমার ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে এসেছি", বলছেন তিনি।
"পাড়ার প্রত্যেকটি ঘর থেকে ছেলেরা গেছে। আমার ছেলেকেও দিয়েছি।"
এই নারী এবং শিশুদের তাদের পরিবারের পুরুষদের সঙ্গে কবে দেখা হবে বা আদৌ দেখা হবে কিনা সেটিও অনিশ্চিত।
নুরাঙ্কিস নামের এক নারী চারটি ছোট বাচ্চাকে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছেন। পথে তাদের সঙ্গী একজনের বাচ্চা পানিতে ডুবে মারা গেছে।
নুরাঙ্কিসকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিতে এসেছিলেন তার স্বামী। পথে তার স্বামীর ওপর হামলা হয়। তার পায়ে দা দিয়ে কোপানো হয়। নুরাঙ্কিস পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু স্বামীর কোন খোঁজ পাননি এখনো।
শরণার্থীদের দলগুলোতে যে পুরুষের সংখ্যা এত কম, তার একটি ভিন্ন কারণও আছে।
মিয়ানমার সরকারের ভাষ্যমতে, রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছিল দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একটি রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠির হামলার মধ্য দিয়ে। এই রোহিঙ্গা নারীদের অনেকের কথায়ও বোঝা যাচ্ছে অনেক রোহিঙ্গা পুরুষ এখন এ ধরণের বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে সেনাদের সাথে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/আগস্ট ৩১, ২০১৭)