সেই হতভাগ্য নারীর পরিচয় মিলেছে, আটক ১
সাভার প্রতিনিধি : কেবল তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নি ঘাতকরা, লাশ কেটে ৩৮ টুকরো করে ড্রামের ভিত লুকিয়ে রেখেছিল তারা। আশুলিয়ায় নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের শিকার সেই হতভাগ্য নারীর পরিচয় অবশেষে পাওয়া গেছে। এ ঘটনায়
নিহত ওই নারীর নাম তাসলিমা বেগম। সে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার নৈহাটি বড়পাতা গ্রামের তক্কেল মন্ডলের মেয়ে। তাসলিমা আশুলিয়ার হা-মীম গ্রুপের নেক্স কালেকশন কারখানায় কাজ করতেন।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযোগে মুকুল নামে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। সে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের চাকরি করে বলে জানা গেছে। শনিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মুকুলকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
এদিকে নিহতের স্বামী মজিবরসহ পলাতক আরও দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আটককৃত মুকুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় সে ছাড়াও নিহতের স্বামী মজিদসহ আরও একজন কিলিং মিশনে অংশে নেয়।
নিহতের পরিবার ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা জায়, নিহত তাসলিমা আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় তার চাচী শিউলির সাথে একটি ভাড়া বাসায় থেকে তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সেখানেই তাসলিমার সাথে পরিচয় মজিবরের। এরপর তাদের মধ্যে মেলামেশা ও ঘনিষ্ঠতা বেড়ে উঠায় এলাকাবাসীর চাপের মুখে তাসলিমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় এবং পোশাক কারখানার কাজ ছেড়ে দিয়ে স্থানীয় একটি টেইলার্সে (নাম ভাই ভাই টেইলার্স) চাকুরি নেয় মজিবর। তবে মজিবর তাসলিমাকে মেনে নিতে চাইছিল না।
গত ৩০ আগস্ট আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার প্রবাসী মাসুদ মিয়ার বাড়িতে একটি কক্ষ ভাড়া নেয় মজিবর। এরপর ৩১ আগস্ট রাতে তাসলিমাকে তার চাচী শিউলির বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। এর দুই দিন পর পহেলা সেপ্টেম্বর ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পুলিশ রাতেই মজিবরের কক্ষটির তালা ভেঙে একটি ড্রামের মধ্য থেকে তাসলিমার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে।
ভাই ভাই টেইলার্সের মালিক মো. আলম জানিয়েছেন, জুলাই মাসের ২৪ তারিখে মজিবর তার দোকানে কাজে যোগ দেয়। এখানে তার কেউ না থাকায় দোকানের বিপরীতে বুলবুলের বাড়িতে অপর এক কর্মচারীর সঙ্গে মজিবরের থাকার ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ওই কক্ষে মজিবরের সাথে কারিগর মেহেদী ও রফিকুল থাকতেন। ৩১ আগস্ট দুপুরের আগেই পাওনা বুঝে নিয়ে চলে যায় মজিবর।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসাআই) মলয় কুমার সাহা মুকুলকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত বাকিদেরকে আটকে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, হত্যার পর তাসলিমার লাশটি গুম করার জন্যই তথ্য গোপন করে প্রবাসীর নিরিবিলি বাড়িটির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন মজিবর। তার ভাড়াটিয়া ফরমে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে উল্লেখ করলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের নিবন্ধনের ঠিকানা রয়েছে রাজধানীর রামপুরায়।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৭)