নগর উন্নয়নের ১৫শ’ কোটি টাকা কোথায় গেলো?
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর নগর উন্নয়নের টাকা লুটপাটের অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। তিনি বলেন ‘গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী ১৫শ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তারপরও দেখা যাচ্ছে রাস্তাঘাটে মানুষের দুর্ভোগ তো কমছেই না, বরং বাড়ছে। এতোগুলো টাকা কোথায় গেলো?’
মঙ্গবার বিকেল ৩টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে মহানগরের জলাবদ্ধতার সমস্যা ও দূরীকরণ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোহেল এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, হিসেব অনুযায়ী দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ৭০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। আর ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক, নালা ও ফুটপাতের দৈনন্দিন মেরামতের বরাদ্দ ১৮০ কোটি টাকা। এ টাকার তিন ভাগের একভাগও যদি রাজধানীর উন্নয়ন কাজে ব্যয় হতো। তাহলে এতো দুর্ভোগ নগরবাসীর তো থাকারই কথা নয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন।
হাবিব উন নবী খান সোহেল মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলেই রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার মতো সময় আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নেই।
সোহেল আরো বলেন, দেশে শান্তি, স্বস্তি ও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে দেশবাসী এখন বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ।
এ সময় প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জলাবদ্ধতা নিরসনে কতগুলো সুপারিশ তুলে ধরেন।যার মধ্যে রয়েছে-
৮০'র দশকের ফ্লাড অ্যাকশন প্রোগ্রাম (ফ্যাপ)-এর আওতায় ঢাকার চারপাশ ঘিরে একাংশে শহররক্ষা বাঁধ তৈরি হয়৷ পুরো কাজ শেষ করলে শুধু দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বা জুরাইন নয় পুরো ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব।
২৬টি খালকে রক্ষণাবেক্ষণ করে পানিপ্রবাহ সচল রাখা৷
বৃষ্টিতে পানি জমলে কঠিন এবং তরল বর্জ্য একাকার হয়ে যায়৷ বর্জ্য ড্রেনেজ সিস্টেম ছাড়াও কঠিন বর্জ্য সরাসরি ডাম্পিংয়ে নেয়া৷
প্রাকৃতিকভাবেই পানি নিষ্কাশনের পথগুলো খুলে দেয়া হলো সহজ পথ৷
ঢাকা শহরের জিওগ্রাফিক ম্যাপ আছে৷ প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের হিসাব আছে৷ কী পরিমাণ বৃষ্টিতে কত দ্রুত পানি নিষ্কাশন হবে তা নির্ধারণ করে পাম্পের মাধ্যমে বৃষ্টি চলাকালীন পানি নিষ্কাশন করলে পানি দাঁড়াতে পারবে না।
যেহেতু ৪৫ ও ৪৭ নং ওয়ার্ডের পদ্মা সেতু রেললাইন সংযোগ বাস্তবায়ন করা হবে তাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল লাইনটি সম্প্রসারণ করা হলে বিদ্যমান আউটলেট দুটি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে এই স্থানটি দিয়ে ভবিষ্যতে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে না। ভবিষৎ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্রস্তাবিত (নকশায় চিহ্নিত) বর্ণিত সড়কে মাস্টার পাইপ লাইনটি বাস্তবায়ন করা হলে ওই এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা ওয়াসার সমন্বয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক মাহমুদা ডলি, বাংলাদেশ অনলাইন মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের (বোমা) সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম খান প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭)