দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাল নিয়ে ‘চালবাজি’ ও ‘রাজনীতি’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, চালের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় ওঠানোর চেষ্টা চলছে। চালের দামের এই ঊর্ধ্বগতির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘চালের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় ওঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। এটি হতে পারে না। চালের মূল্য বৃদ্ধির পর আমরা ট্যাক্স তুলে দিলাম।এরপর ভারত থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের কাছে আছে। তারপরও চাল নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সরকারকে বিব্রত করাই এর উদ্দেশ্য।’

এসময় চালের দামের ঊর্ধ্বগতির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন তিনি আরও বলেছেন, ‘দেশের কিছু অসাধু চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিক চাল নিয়ে চালবাজি শুরু করেছে। প্রতি মণ ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। তিনি যদি প্রতি মণ ধান এক হাজার টাকায় বিক্রি করতে না পারেন তাহলে কীভাবে চলবে? কিন্তু তাই বলে চালের দাম কি ৭০-৮০ টাকায় উঠবে?’

সারাদেশে চাল নিয়ে চালবাজি ও রাজনীতি চলছে দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেশকে একটি অস্থির পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে সুক্ষ্ম কারচুপি হচ্ছে। সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা চলছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

এ বছর ধানের উৎপাদন প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা এক কোটি ৯১ লাখ টন বোরো ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম। বন্যায় হাওরে নষ্ট হয়েছে ছয় থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন। এছাড়াও সারা দেশের ধানক্ষেতে ব্লাস্টসহ নানা কারণে আরও ১০-১১ লাখসহ বোরো ফসলসহ সর্বোচ্চ ২১ লাখ টন ধান নষ্ট হয়েছে । এ মুহূর্তে এক কোটি ৭০ লাখ টন বোরো ফসল ঘরে এসেছে। এবার আউশ ধান উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ মেট্রিক টন। বোরো ও আউশসহ আমরা এক কোটি ৯২ লাখ টন ধান পেয়েছি।’

দেশে চালের চাহিদা ও মজুদ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৮৫ হাজার মেট্রিক টন চাল খাই। গত ১৫ মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার মাসে আমরা এক কোটি দুই লাখ টন চাল খেয়েছি। এরপরও আমাদের প্রায় এক কোটি টন মজুদ চাল আছে। এ চাল মিল মালিক, ব্যবসায়ী, বাজার ও ভোক্তার ঘরে আছে।’

এ মৌসুমে বোরো ফসল সংগ্রহের ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘এবার লক্ষ্য অনুযায়ী আমরা সরকারের গোডাউনে বোরো ফসল সংগ্রহ করতে পারিনি। কারণ আমরা চালের দর নির্ধারণ করেছিলাম ৩৪ টাকা। কিন্তু সেই দরে চাল আমরা পাইনি। ১২ লাখ টন বোরো সংগ্রহ করতে চেয়েছিলাম, পেয়েছি মাত্র ২ লাখ টন। এজন্যই আমাকে আমদানির পথ খুঁজে নিতে হয়েছে। এছাড়া আমার আর কী পথ ছিল? আমার তো মজুদ নেই। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহ করতে পারলে মজুদ ভালো থাকতো।’

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭)