প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদন দেখালেন আইনমন্ত্রী
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : এক মাসের ছুটি চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাঝে করা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার আবেদনটি প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আনিসুল হক রাষ্ট্রপতিকে লেখা প্রধান বিচারপতির ওই চিঠিটি প্রথমে পড়ে শোনান। পরে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে ওই চিঠি তিনি তুলে ধরেন এবং গণমাধ্যমকর্মীদের চিঠির ছবি তোলার অনুমতি দেন।
আইনমন্ত্রীর প্রকাশ করা চিঠিতে দেখা গেছে, নানাবিধ শারীরিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে ৩ অক্টোবর থেকে আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। চিঠিতে তিনি এটাও লিখেছেন যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ওই আবেদনে এস কে সিনহা বলেছেন, ‘আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি গত বেশ কিছুদিন যাবৎ নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভুগছি। আমি ইতিপূর্বে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন ছিলাম। বর্তমানে আমি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছি। আমার শারীরিক সুস্থতার জন্য বিশ্রামের একান্তই প্রয়োজন। ফলে আমি ৩ অক্টোবর হতে ১ নভেম্বর, ২০১৭ পর্যন্ত ৩০ দিন ছুটি ভোগ করতে ইচ্ছুক। এমত অবস্থায় ৩ অক্টোবর হতে ১ নভেম্বর ২০১৭ তারিখ পর্যন্ত ৩০ দিনের ছুটির বিষয়ে মহাত্মনের সানুগ্রহ অনুমোদন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।’
গত অগাস্টে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর থেকেই ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।
সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে মঙ্গলবার আদালত খুললে প্রধান বিচারপতির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের হুমকিও দিয়ে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা।
কিন্তু তার আগেই সোমবার বিচারপতি সিনহার ছুটিতে যাওয়ার খবর আসে। সরকারের এক প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি তার এক মাসের ছুটি মঞ্জুর করেছেন এবং এই সময়ে জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির কার্যভার দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হঠাৎ করে প্রধান বিচারপতির এভাবে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নানা কথাও উঠছে। বিএনপি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীর সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে এস কে সিনহাকে চাপের মুখে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির এই অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি না করার জন্য বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘তিনি অসুস্থ, এটা নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। আসুন আমরা সবাই মিলে বিচারপতি এস কে সিনহার সুস্থতার জন্য দোয়া করি। বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বলব, আসেন দোয়া করি, উনি যেন সুস্থ হয়ে যান।’
এস কে সিনহা কি গৃহবন্দী? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই না।’
আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন,চিকিৎসকের সঙ্গে তার কথাবার্তা হচ্ছে। যখন দেখতে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে, তখন তিনি বিচারপতি এস কে সিনহাকে দেখতে যাবেন।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ০৪, ২০১৭)