নৌকায় চড়িয়ে ১৯ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

 

বুধবার (১১ অক্টোবর) ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহা সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ এদেরকে বাংলাদেশে পাঠানোর পর বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা ওই রোহিঙ্গাদের আটক করে। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ, ছয়জন মহিলা ও ১০ জন শিশু রয়েছে।

 

আটক রোহিঙ্গারা হলেন-মরিয়ম বেগম, আসমা খাতুন, রাশিদা খাতুন, সুমাইয়া বেগম, গুলশান আরা খাতুন, জাইনুল কেগম, মো. আলাউদ্দিন, আজিজুর রহমান ও এনায়েত আলি। অবশিষ্ট ১০ জন শিশু, তাদের বয়স ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর।

 

এদিকে এই ১৯ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিয়ে কি করা হবে, সেই বিষয়ে বিজিবি ও পুলিশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।

সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবি সূত্র জানায়, ১৯ রোহিঙ্গাকে বিএসএফ নৌকায় করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তারা এখন পদ্মশাখরা ক্যাম্পে রয়েছে।

সূত্র আরো জানিয়েছে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আটককৃত রোহিঙ্গাদের বেলা আড়াইটার দিকে সদর থানায় নিয়ে আসে বিজিবি। কিন্তু তাদেরকে গ্রহণ করছেনা পুলিশ।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মারুফ আহমেদ বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়া রোহিঙ্গাদের আহনগতভাবে আমরা গ্রহণ করতে পারি না। বিজিবি তাদেরকে ভারতে ফেরত পাঠাতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করে আমাদের কাছে দিয়ে দায় এড়াতে চাচ্ছে।’

এদিকে সাতক্ষীরা বিজিবি পদ্মশাখরা বিওপির সুবেদার মোশারফ হোসেন বলেছেন, ‘তারা যেহেতু রোহিঙ্গা, সে কারণে তাদেরকে থানায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রহণ করছে না। উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার জানিয়েছেন, বিজিবি তাদের কাছে যাদের তুলে দিতে চাচ্ছে তারা প্রকৃত রোহিঙ্গা কিনা সে বিষয় পুলিশ নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া পুলিশ কোনো মামলা না দেওয়ায় তারা আইনগতভাবে তাদের গ্রহণও করতে পারবেন না। বিজিবিকে তাদের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারা ভারতীয় নাগরিক কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার।

সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবি’র পাবলিক রিলেশন অফিসার সুবেদার সামছুল আলম জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তারাও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেন নি।

আটক রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুই দফায় তারা মিয়ানমার থেকে ভারতের দিল্লীতে যায়। সেখানে তারা বসবাস করছিল। কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে সে দেশের পুলিশ তাদেরকে আটক করে বিএসএফ’র কাছে তুলে দেয়। বিএসএফ সদস্যরা সুযোগ বুঝে বুধবার ভোরে নৌকাযোগে ইছামতি নদী পার করে বাংলাদেশে তাদের ঠেলে দেয়। এরপর তারা বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ে।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ১১, ২০১৭)