তৈমুর খান এর দুটি কবিতা
বায়ু প্রবাহ
কঞ্চির বাড়ি । খেজুর পাতার তালাই পাতা ।
আড়ষ্ট সংগীত বাজে। সংগীতে মৃদু নড়ে মাজা ।
দোয়েল আসেনি। ভূগোল শিক্ষিকার ছায়া
পড়ল রাস্তায় । স্মৃতিটুকু কুড়িয়ে রাখো ।
বায়ুমণ্ডলের মানচিত্র বোর্ডে আঁকা ।
ক্ষয় হওয়া মূল্যবোধটুকু খেয়ে নিচ্ছে টিকটিকি ।
কী হবে এঘরে প্রজাপতি?
মুখ পুড়ছে, মুখ পুড়ছে—
গর্ভে সন্ততি। থুবড়ি হৃদয়ে চারুলতা
আট মাসে পড়ল এবার।
বাবার নাম শূন্য দশক। পোস্টমডার্ন ।
নিবাস অন্ধকার। আদিম চাষবাস ।
চোখ জ্বলছে, চোখ জ্বলছে....
প্রবৃত্তির বিন্যস্ত মার্গে দাঁড়ায় সাহস ।
স্তরগুলি ভেসে উঠছে মহাশূন্যে
প্রতিটি স্তরে বায়ু প্রবাহের ইতিহাস...
সরলরেখার নীচে
সরলরেখার নীচে
আমাদের কোনও বারুদ জমা নেই
ঈশ্বরের ধারণায় বাতাবি লেবুর গাছ
বেড়ে উঠেছে
সকালের রোদের ঘ্রাণে কোনও পাখিজন্মের
ইতিকথা
চোখ ছুঁয়ে যাচ্ছে শান্ত নদীর ঘুম
অরণ্যের মুগ্ধ বিশ্বাস —
বাতাসে ওড়াচ্ছি কথা
কথার নীরব সংযম
আলোর মেয়েরা খেলা করছে
ছু কিত্ কিত্ খেলাঘর
ঘরে ঘরে নামছে ভ্রমর
কাঁপছে অদৃশ্য ডানা তার
আমাদের আশ্বাসের জ্বর নেই
পা ফেলছে মাটিতে এবার...
[তৈমুর খান: জন্ম ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, পশ্চিম বঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট সংলগ্ন পানিসাইল গ্রামে ।পিতা ও মাতা :জিকির খান ও নওরাতুন ।শিক্ষা :বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতা নিয়ে পি এইচ ডি। পেশা :উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহশিক্ষক ।নব্বই দশকের কবি ও গদ্যকার। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হল : কোথায় পা রাখি, বৃষ্টিতরু, খা শূন্য আমাকে খা, আয়নার ভেতর তু যন্ত্রণা, জ্বরের তাঁবুর নীচে বসন্তের ডাকঘর, একটা সাপ আর কুয়াশার সংলাপ, প্রত্নচরিত, নির্বাচিত কবিতা ইত্যাদি । পুরস্কার পেয়েছেন কবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ।]