ঢাবি ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে প্রথম বর্ষ (স্নাতক) সম্মান শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার।
এদিন সকাল ১০-১১টা পর্যন্ত এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু শত টেষ্টা স্বত্তেও বিতর্কের বাইরে রাখা যায় নি ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের এই ভর্তি পরীক্ষা।
অভিযোগ উঠেছে-পরীক্ষার আগের রাতেই ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গেছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া সেই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে শুক্রবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মিল পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, পরীক্ষায় জালিয়াতের অভিযোগ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এই আটকের বিষয়টি স্বীকার করলেও প্রশ্নপত্র ফাঁস পাওয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এম আমজাদ আলী গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন পরীক্ষার্থী জালিয়াতির চেষ্টা করেছে। তাদেরকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
তবে পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘এমন কোনও অভিযোগ বা তথ্য আমাদের কাছে নেই। এটা হতে পারে না।’
অভিযোগ উঠেছে-পরীক্ষার আট ঘন্টা আগেই ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র ও যে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা মিলিয়ে দেখেছেন মিডিয়াকর্মীদের অনেকেই। সেখানে দুটি প্রশ্নেপত্রে শতভাগ মিল খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন তারা।
তাদের দাবি অনুযায়ী, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে দেখা গেছে, ইংরেজি প্রথম প্রশ্ন ছিল “হোয়াট ইজ দ্য মিনিং অব দ্য ইডিওম ‘টু ফলো ইয়র নোজ’?’’ তৃতীয় প্রশ্ন ছিল “দ্য হাইওয়ে এজেন্স. . . বেড ওয়েদার...” অস্টম প্রশ্ন ছিল “জার্মানি হ্যাজ ওন দ্য ফুটবল ম্যাচ...” ১২তম প্রশ্ন ছিল “দিস ইজ দ্য স্কল হুইচ...” এবং ২০ নম্বর প্রশ্ন ছিল “অ্যা পিস অব কেক মিনস”।
শুক্রবার পরীক্ষা শেষে প্রশ্ন মিলিয়ে দেখা গেছে, একটি সেট ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে।
এবার ঢাবি ক্যাম্পাসে ৫৩টি ও ক্যাম্পাসের বাইরে রাজধানীর ৩৩টি স্কুল-কলেজসহ মোট ৮৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৬১০টি (বিজ্ঞানে-১১৪৭টি, বিজনেস স্টাডিজে- ৪১০, মানবিকে- ৫৩টি) আসনের জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৫৪ জন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী জানান, ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে দুই শিক্ষার্থী এবং সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১৩ জনকে আটক করেন তারা।
পরীক্ষার আগের রাতে আটক দুজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রানা এবং ফলিত রসায়নের প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তাদের মধ্যে শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র রানা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক। আর মামুন অমর একুশে হলের আবাসিক ছাত্র। প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাদের কাছ থেকে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করেন, যা দিয়ে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ২০, ২০১৭)