‘রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার রাজি’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মানুষদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার সরকার। ‘কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের আলোকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে দেশটি।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন মিয়ানমারে অবস্থানরত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মো. অপু।
এদিকে, মিয়ানমার সফররত বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকেও এমনটাই বলেছেন।
নেপিডোতে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. কর্নেল চ সুয়ি এবং পুলিশ প্রধানের সাথে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে দুই দেশের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে খুব শীঘ্রই একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে।’
নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে এই যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে বলেছেন কফি আনান কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে যৌথ এই কমিটি ঠিক করবে রোহিঙ্গাদের কিভাবে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়, ‘তারা (মিয়ানমার) ফেরত নেওয়ার কথা বলেছে, তারা জানিয়েছে তাদের সরকার প্রধান কফি আনান কমিশন বাস্তবায়নের জন্য কয়েকটি কমিটি তৈরি করেছেন.. কিন্তু আমরা বলেছি বাংলাদেশের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির তত্বাবধানেই কফি আনান কমিশনের বাস্তবায়ন হতে হবে।’
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিবের ঐ কমিশন রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দেওয়ার সুপারিশ করেছে যা নিয়ে মিয়ানমার সরকারের ঘোরতর আপত্তি রয়েছে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি রাখাইনে নির্যাতন বন্ধের দাবি করেছেন যাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়। মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘তারা বলেছেন কোনো নির্যাতন হচ্ছেনা, তারা (রোহিঙ্গারা) নিজেরাই চলে যাচ্ছে। আমি বলেছি চলে যাওয়া ঠেকান আপনারা।’
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি নিজে রাখাইনে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইতিবাচক সাড়া পাননি।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, সীমান্তে মাইন পাতার প্রসঙ্গ তোলার পর, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ‘অন্যদের’ দোষারোপ করেছে। ‘তবে মিয়ানমার বলেছে তারা মাইন অপসারনের উদ্যোগ নেবেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামীকাল (বুধবার) তার সাথে অং সান সূ চির বৈঠক হবে। বাংলাদেশের এসব দাবি, প্রস্তাব এবং বক্তব্য তখন তিনি আবারো তুলবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এও জানিয়েছেন যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ 'আরসা জঙ্গিদের' ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছ থেকে গোয়েন্দা তথ্য চেয়েছে।
মঙ্গলবার দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে বাংলাদেশের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন এবং মিয়ানমারের ১৬ সদস্যের নেতৃত্ব দেন ওই দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব ইউ টিন মায়েন্ট।
সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দু’দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। এরপর বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে দুই দেশের ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট’বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে মিয়ানমার পৌঁছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বুধবার (২৫ অক্টোবর) তিনি ঢাকায় ফিরে আসবেন।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ২৪, ২০১৭)