বরিশাল অফিস : পারিবারিক কলহের জেরে বরিশাল শহরতলীর চরবাড়িয়ায় দিনমজুর  মোক্তার বেপারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে এই ঘটনা ঘটার পর শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে আনা হলে সকাল ১০টায় মোক্তারের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় কাউনিয়া থানা পুলিশ নিহত মোক্তার হোসেনের স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৭), একাদশ শ্রেণিতে অধ্যায়ন করা কন্যা তানজিলা আক্তার ও অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়রত পুত্র  আফিজুল ইসলামকে আটক করেছে।

প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন কাউনিয়া থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই তানজিল আহমেদ।

নিহত মোক্তার বেপারীর ছোট বোন শিল্পী বেগম বলেন, ‘দুই দশক আগে বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের বাসিন্দা মজিদ হাওলাদারের কন্যা মনিরা বেগমের সাথে বিয়ে হয়েছিল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া গ্রামের অফেজউদ্দিন বেপারীর ছেলে মোক্তার বেপারীর সাথে। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। কন্যা তানজিলা আক্তার সরকারী মহিলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর বাড়ি সংলগ্ন চরবাড়িয়া বোর্ড স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়ন করে পুত্র আফিজুল ইসলাম। তবে বছর তিনেক ধরে সন্তানদের পড়ালেখা ও আনান্য খরচের টাকার জন্য স্বামী মোক্তারের ওপর চাপ দিতে থাকে মনিরা বেগম। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। আর্থিক চাহিদা মেটাতে না পরায় আমার ভাইকে স্ত্রী ও কন্যা মিলে হত্যা করেছে।’

বাড়ির কাছাকাছি থাকা নিহত মোক্তারের মামী কমলা বেগম জানিয়েছেন, ঘটনার পর তিনি দৌড়ে গিয়ে দেখেন আহত মোক্তারের শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। এ সময় মোক্তার বলেন, স্ত্রী মনিরা ও কন্যা তানজিলা মিলে তাকে কুপিয়ে আহত করেছে।

ওই এলাকার (৭নং ওয়ার্ড চরবাড়িয়া) ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহিদুল আলম তুহিন বলেছেন, ‘রাত ৪টার এই হত্যাকান্ড ঘটে। হত্যা করার পর সকাল ৬টায় আমার মোবাইলে ফোন করে মনিরা বেগম স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার কথা বলেন।’ তিনি আরো জানিয়েছেন, এরপর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মোক্তারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠান। ওই সময় থানা পুলিশকে জানালে তারা মোক্তারের স্ত্রী ও সন্তানরা যেন পালাতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে বলেন। এরপর পুলিশ গিয়ে মনিরা বেগম ও তার দুই সন্তানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-৪ রেজিস্ট্রার ডা. মো. ইখতিয়ার আহসান জানান, মোক্তারের মাথায় ধারালো অস্ত্রের ৮ থেকে ১০টি আঘাত রয়েছে। আর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

কাউনিয়া থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা তানজিল আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোক্তার বেপারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আটককৃতরা। মোক্তারের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

এ ঘটনায় মামলা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ২৬, ২০১৭)