ফেনীতে খালেদার গাড়িবহরে হামলা–ভাঙচুর

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রোহিঙ্গাদের দেখতে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন দুর্বৃত্ত লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়িবহরে হামলা চালায়। কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এর মধ্যে সাংবাদিকদের গাড়িও রয়েছে।
একাত্তর, ডিবিসি, চ্যানেল আই, যমুনা, একুশে, এটিএন নিউজ ও বৈশাখী টেলিভিশনের গাড়ি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী মারধরের শিকার হন।
এছাড়া কালের কণ্ঠ, নয়া দিগন্ত, যুগান্তর, যায়যায়দিন, গাজী টিভি, আমাদের সময়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হন।
এছাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, তাদের নেতা-কর্মীবাহী ১০/১১টি গাড়ি ভাংচুর হয়েছে।
বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িসহ বহরের ৩০টির মতো গাড়ি মোহাম্মদ আলী বাজার অতিক্রমের পরপরই ১৫-২০ যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে উঠে আসে। কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা গেছে।
হামলাকারী যুবকদের বিএনপি চেয়ারপারসনের বহরের গাড়ি বেছে বেছে ভাংচুর করতে দেখা যায়। বহরের বাইরের প্রাইভেটকারসহ দূরপাল্লার কোনো গাড়িতে হামলা চালায়নি তারা।
একাত্তর টিভির ক্যামেরাপারসন আলম হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদন শফিক আহমেদ হামলায় আহত হন।
আলম ভাংচুরের ভিডিও ধারণ করতে গেলে একজন হামলাকারী তার উপর চড়াও হন।
একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ৪৫ থেকে ৫০ জন ছেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতে গাড়ির ওপর হামলা চালায়। আমাকে ও আমার চিত্রগ্রাহক আলম হোসেনকে তারা মারধর করে। আমাদের চ্যানেলের ক্যামেরাও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা পরে ফেনীর লালপুরের একটি হোটেলে এসে উঠলে সেখানেও একদল যুবক গিয়ে হুমকি দেয় বলে ওই সাংবাদিকরা জানান।
তাদের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা খাবার না খেয়েই হোটেল ছাড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, এখনো রাস্তায় হামলাকারী দুর্বৃত্তরা অবস্থান করছে। মূলত স্টার লাইন পেট্রল পাম্পের কাছে তারা জড়ো হয়ে আছে।
গাড়িবহরে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, মুন্সিগঞ্জের ভবের চর ও কুমিল্লার দাউদকান্দি ও ইলিয়টগঞ্জেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এর আগে বেলা একটার দিকে কুমিল্লায় খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আসা বিএনপি নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় কর্মীরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিকেল চারটার দিকে ওই স্থান অতিক্রম করে।
এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার যাওয়ার পথে কয়েক জায়গায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কক্সবাজার যাওয়ার বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত। রাস্তায় যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল। এরপরও পথিমধ্যে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২৮, ২০১৭)