দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের কাছ  বাংলাদেশ প্রত্যাশিত ব্যবহার পায় নি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক।

রবিবার (২৯ অক্টোবর) স্থানীয় একটি হোটেলে ইউএন উইমেন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারের কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো রেসপন্স (প্রতিক্রিয়া) আশা করেছিলাম। কিন্তু, যেভাবে আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম, এই মুহূর্তে ঠিক বলতে পারছি না, আমরা সন্তুষ্ট।’

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘এটির কাজ চলছে এবং এটি গঠনের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।’

চলতি বছর নভেম্বরের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন সম্পন্ন হবে বলে দু’পক্ষ একমত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মিয়ানমার সফরের সময় এটি নির্ধারিত হয়।

পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ‘এটির সমাধানের কোনও শর্টকাট নেই। আমাদের দেশের মানুষ আটকা পড়লে আমরাও বলি যাচাই-বাছাই করতে হবে। কারণ, আন্তর্জাতিক নিয়মগুলো সেভাবেই তৈরি করা আছে। সবাইকে একসঙ্গে ধরে পাঠিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই।’

সমস্যাটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘দীর্ঘায়িত শব্দটি আপেক্ষিক। আগে এ ধরনের প্রক্রিয়া ঘটনা ঘটার অনেকদিন পরে শুরু হতো, এখন দেড় মাসের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পেরেছি। এটি ভালো লক্ষণ। এটি কতটুকু গতিশীলতা পাবে আমরা দেখবো। কিন্তু, গতি আরও বাড়ানোর জন্য যে বহুপাক্ষিক চাপ রাখার কথা সেটি আমরা বজায় রেখেছি।’

চাপ বন্ধ হলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘ চাপ বন্ধ হলে কী হবে সে বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা করাটা ঠিক হবে না। আর বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনাও দেখছি না। এই অবস্থায় এই সময় যে ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রাখা দরকার সেটি সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাবে। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করার কোনও বিকল্প নাই।’

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ‘আগে দেখা যাক, নিরাপত্তা পরিষদে কে কী অবস্থান নিচ্ছে, তারপর এ বিষয়ে কথা বলা যাবে। আমাদের প্রত্যাশা হলো সব দেশ মিলে একটি শক্ত ব্যবস্থা নেবে।’

ইউএন উইমেন আয়োজিত নিরাপত্তা কাউন্সিল রেজ্যুলেশন-১৩২৫ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘এর অধীনে আমরা নারীদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে জাতীয় অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছি। আমরা আশা করছি, এটা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করবো। এ ধরনের অ্যাকশন প্ল্যান সাধারণত মন্ত্রিপরিষদ সভায় উপস্থাপন করা হয় না কিন্তু যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক ডক্যুমেন্ট (নথি), আমরা চাই দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি এটি অনুমোদন করুক।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্টে সেনাক্যাম্পে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন-পীড়ন শুরু করায় প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আগে থেকেও অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারকে লাগাতার আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। চলতি মাসে দু’দিনের সফরে মিয়ানমারে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে দু’পক্ষের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ২৯, ২০১৭)