যশোর প্রতিনিধি : দুর্নীতির অভিযোগে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওহাবকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন যশোরের স্পেশাল জজ আদালত। একই সঙ্গে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে যশোর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় দেন।

৯৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সে তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৮ সালে আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলা করেছিল।

রায়ের পর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুদকের ২৬ (২) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২৭ (১) ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে অর্জিত ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সা টাকা মূল্যের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, আসামিপক্ষ হাইকোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে। এরপর আদালত গত ২১ আগস্ট মামলার বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন।

আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী গত ৩ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়েছে। ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের আদর্শ পাড়ার কবি সুকান্ত সড়কের মরহুম জরীপ বিশ্বাসের ছেলে ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আব্দুল ওহাব। তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় দুর্নীতির মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী।

এই মামলায় ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন।
এতে উল্লেখ করা হয়, আব্দুল ওহাব তার সম্পদ বিবরণীতে ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৩২৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু, তদন্ত কর্মকর্তা যাচাই করে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৬ টাকার সম্পদ পেয়েছেন।

আব্দুল ওহাব নিজে, তার ছেলে, কন্যা ও স্ত্রীর নামে অসাধু উপায়ে ক্রয়সূত্রে অর্জিত ৯০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫২ টাকা ৭০ পয়সা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উদ্দেশ্যেমূলকভাবে গোপন করেছেন, শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে নিজের নামে, মায়ের নামে, তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের নামে এবং বেনামে ক্রয়সূত্রে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সর্বমোট ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সা টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উল্লেখ্য, আব্দুল ওহাব ঝিনাইদহ-১ আসনের দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য ছিলেন। এছাড়া বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ৩০, ২০১৭)