উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি, ৭ লাশ উদ্ধার
কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গাবাহী দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনায় উখিয়া থেকে নারী ও শিশুসহ চারজন এবং টেকনাফ থেকে তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের বাইল্যাখালি পয়েন্টে ও সোমবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়া পয়েন্টে এ দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, ৪০ জনের মতো রোহিঙ্গা নিয়ে একটি নৌকা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় বাইল্যাখালি পয়েন্টে ঢেউয়ের ধাক্কায় উল্টে যায়। দিনের বেলায় এ ঘটনা হওয়ায় স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার তৎপরতার কাজে অংশ নিয়ে এক শিশুকে মৃত ও ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাহারছড়ার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে নেওয়া হয়।
বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাঞ্চন কান্তি দাশ বলেন, হাসপাতালে আনার পর তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। মৃত ব্যক্তিদের একজন নারী ও বাকি দুজন শিশু।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৩২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ছয়জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে সোমবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়া পয়েন্টে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া জানান, রাতে মহেশখালিয়াপাড়া পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় লোকজন ও নৌকায় থাকা রোহিঙ্গারা বেশ কিছু লোকজনকে উদ্ধার করেন। তাদের মধ্যে সাতজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আরও ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সকালে একই পয়েন্ট দিয়ে আরও দুটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইনউদ্দীন খান।
নৌকাডুবির ঘটনায় সাঁতরে তীরে উঠে আসা রোহিঙ্গা মো. ফরিদ আলম বলেন, তাদের নৌকায় তিনজন মাঝি মল্লাসহ ৩৮ জনের মতো মানুষ ছিল। ঘটনার পর পাঁচজনের মতো নিখোঁজ আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, পানিতে ডুবে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা রোগীদের সবাই শিশু। তাদের সবার বয়স পাঁচ বছরের নিচে। এদের মধ্যে ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
২৯ আগস্ট থেকে আজ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গাবাহী ২৮টি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ৩১, ২০১৭)