দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ৪৬তম জাতীয় সমবায় দিবস শনিবার (৪ নভেম্বর)। ‘উৎপাদনমুখী সমবায় করি, উন্নত বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সারা দেশে এ দিবস পালিত হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাদের বাণীতে আধুনিক প্রজন্মের উপযোগী সমবায় সমিতি গঠনে গুরুত্বারোপ করেছেন।

একই সঙ্গে সমবায় ব্যবসার মাধ্যমে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে অর্জনে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান তারা।

তিনি বলেন, সমবায়ের সফলতার জন্য সত্ ও যোগ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সমবায় সমিতি গঠন ও নেতৃত্ব নির্বাচনে সমবায়ীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সমবায় গঠনের মাধ্যমে ব্যবসায় বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সম্ভব।

রাষ্ট্রপতি সমবায়কে জনগণের সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচন, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উত্পাদিত পণ্যের বাজারজাত ও পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিসহ নারীর ক্ষমতায়নে সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। তিনি (বঙ্গবন্ধু) বিশ্বাস করতেন উত্পাদনযন্ত্র, উত্পাদন ব্যবস্থা ও বণ্টন প্রণালিগুলোর মালিক বা নিয়ন্ত্রক জনগণ হলে তার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলা সহজতর হবে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবায়ের আদর্শ ও মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে দেশের সকল সমবায়ী ভাইবোনকে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা বিগত বছরগুলোতে সমবায়ের মাধ্যমে দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আরও দুইটি দুগ্ধভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আমরা কৃষি ও অকৃষি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা উৎপাদনমুখী সমবায় গঠনের মাধ্যমে ব্যবসায় বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে তৎপর হোন।

তিনি বলেন, আমরা চাই সকল সমবায়ী এই উন্নয়ন সংগ্রামে সামিল হোন। আমাদের সম্পদ সীমিত। সে সীমিত সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে সমবায় খাতকে আরও শক্তিশালী ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সমবায়ীগণকে উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে আত্মনিয়োগ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় সমবায় একটি আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। দেশে এই মুহূর্তে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭০টি নিবন্ধিত সমবায় প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার ৭২৮ জন সদস্য রয়েছে। সমবায় সমিতিগুলোর কার্যকরী মূলধন প্রায় ১৪ হাজার ৫৪ কোটি টাকা এবং মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৩২ কোটি টাকা।

এ সকল সমবায়ের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৭৩৮ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সমবায়ভিত্তিক ‘একটি বাড়ী একটি খামার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন থেকে আর মাইক্রোক্রেডিট নয়, ‘মাইক্রো সেভিংস’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে সমবায়কে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তিনি গ্রামে গ্রামে বহুমুখী সমবায় সমিতি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। জনগণের দুগ্ধজাত পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য মিল্ক ভিটা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং মাদারীপুর জেলার টেকেরহাটে মিল্ক ভিটার প্রথম প্ল্যান্ট স্থাপন করেছিলেন, যা আজো দেশের বৃহত্তম তরল দুগ্ধ উৎপাদনকারী ও বিতরণকারী সমবায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ০৪, ২০১৭)