নয়াপল্টনে আবদুর রহমানের জানাজা বাদ জোহর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বরিশাল থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের মরদেহ আনতে দেরি হওয়ায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নামাজে জানাজার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১টার পরিবর্তে বাদ জোহর মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা থেকে আবদুর রহমানের মরদেহ হেলিকপ্টারে বরিশাল নেওয়া হয়েছে। বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে মরদেহ আসতে দেরি হবে জেনে বেলা সাড়ে ১১টার পরিবর্তে বাদ জোহর নয়াপল্টনে জানাজায় সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। নয়াপল্টনের পর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দুপুর দুইটায় আবদুর রহমানের তৃতীয়, এরপর সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় চতুর্থ এবং গুলশান আজাদ মসজিদে সবশেষ জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে সাবেক রাষ্ট্রপতিকে দাফন করা হবে বলে জানান শামসুদ্দিন দিদার।
এরআগে শুক্রবার রাত আটটা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
আবদুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯২৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের শায়েস্তাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ১৯৯১ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে পড়াশোন করেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। পেশা জীবনের শুরু হয়েছিল স্থানীয় সমবায় ব্যাংকে। পরে ১৯৫০ এর দশকে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে বরিশাল বার সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আইয়ুব খানের শাসনামলে মুসলিম লীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবদুর রহমান বিশ্বাস রাজনীতিতে আসেন। ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জিয়াউর রহমানের সময়ে ১৯৭৭ সালে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান হন আবদুর রহমান বিশ্বাস। ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে বরিশাল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে আসেন জাতীয় সংসদে।
১৯৭৯-৮০ সালে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী এবং জিয়ার মৃত্যুর পর বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। ওই সময় দলে তার পদ ছিল ভাইস চেয়ারম্যান।
এইচএম এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসে। আবদুর রহমান বিশ্বাস প্রথমে স্পিকার ও পরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পান।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার মেয়াদের শেষ দিকে ১৯৯৬ সালের মে মাসে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগ তখনকার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাসিমসহ তার অনুগত ১৫ সেনা কর্মকর্তার শাস্তির বিষয়টি ছিল দেশের অন্যতম আলোচিত ঘটনা।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ০৪, ২০১৭)