বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং দেওয়ার মাধ্যমে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে উৎসবের শেষদিনে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে দু’শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু সাড়িবদ্ধভাবে লাইন ধরে পিন্ড গ্রহণ বের হন।

বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বান্দরবানের পাহাড়ী অধ্যুষিত মধ্যমপাড়া-উজানীপাড়া ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী-পুরুষের কাছ থেকে ছোয়াইং ও পিন্ড দানের অর্থ গ্রহণ করেন।

দীর্ঘ দু’কিলোমিটার পথ পর্যন্ত পাহাড়ী বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা রাস্তার একপাশে প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে সাড়িবদ্ধভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতি’সহ উৎসবের নানান সামগ্রি ধর্মীয় গুরুদের দান করেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরসহ পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দরাও।

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা জানায়, তিন মাস বর্ষাবাসের (উপুস) থাকার পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করে। এই উৎসবে পাহাড়ীরা চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য চীবর কাপড় বুনে ভিক্ষুদের মাঝে চীবর দান করেন। কোন প্রকার সেলাই ছাড়া তৈরিকৃত চীবর কাপড় ক্যায়াংএ ক্যায়াংএ ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিতরণ করা হয় এ উৎসবে। প্রচলিত আছে প্রায় দু’হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মহা পূণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রতী পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সেই থেকে প্রতিবছর বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার’সহ পাহাড়ের বৌদ্ধ বিহারগুলো ব্যাপক আয়োজনে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব ধর্মীয়ভাবে পালন করে আসছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়েরা।

পার্বতত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, তিনমাস প্রার্থনার পর আত্মার শান্তির জন্য পাহাড়ের বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ শিশু-কিশোরো ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ড দান করে। পূন্যের আশায়, পরিশ্রুদ্ধি লাভের আশায়। ধর্ম মানুষকে শুধু পরিশুদ্ধি নয়, ন্যায় এবং সত্য পথে চলার দিক নির্দেশনা দেয়। কঠিন চীবর দানোৎসবে তিনি সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের সুখ শান্তি কামনা করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ০৪, ২০১৭)