বাম নেতা মাহবুবুল হক না ফেরার দেশে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পরাপারে পাড়ি জমিয়েছেন বাম নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক। কানাডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেছেন ((ইন্নাল্লিলাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তিনি অটোয়ার সিভিক হসপিটালে ভর্তি ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর বয়স।
মাহবুবুল হক ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মাহবুব) আহ্বায়ক।
বাসদের (মাহবুব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মইন উদ্দিন চৌধুরী লিটন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বাসদের অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেছেন, ‘২০০৪ সালে ঢাকায় গাড়িচাপায় গুরুতর আহত হওয়ার পর মাহবুবুল হক কানাডা চলে যান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কানাডাতেই বসবাস করে আসছিলেন।।’
মইন উদ্দিন চৌধুরী লিটন জানিয়েছেন, ঢাকার ঘটনার কারণে মাহবুবুল হককে কানাডাতেও নিয়মিত চিকিৎসা নিতে হাচ্ছিল। এর মধ্যে গত ২৬ সেপ্টেম্বর স্ট্রোক করলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
আ ফ ম মাহবুবুল হকের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে। ১৯৬২ সালে স্কুলে পড়ার সময়ই তিনি প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতি বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। পরে সক্রিয় হন ছাত্র রাজনীতিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে পড়ার সময় ১৯৬৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সূর্যসেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৯-৭০ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (মুজিব বাহিনী) গঠন করা হলে সেখানে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছাত্রলীগ ভেঙে জাসদ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা পেলে মাহবুবুল হক হন প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন।
ভারতের বামপন্থী দল সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়ার (এসইউসিআই) নেতা শিবদাস ঘোষের চিন্তা-চেতনার আলোকে ১৯৮০ সালে বাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। মাহবুবুল হক হন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
তিন বছরের মাথায় আদর্শগত মতবিরোধে বাসদ দুই ভাগ হয়। একটি অংশের নেতৃত্ব পান খালেকুজ্জামান। অপর অংশের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মাহবুবুল হক।
মইন উদ্দিন চৌধুরী লিটন জানান, মাহবুবুল হকের মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছেন তার মেয়ে ও স্ত্রী। সিদ্ধান্ত হলে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ১০, ২০১৭)