দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করেছেন বলে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) গভীর রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে খবর প্রচার করা হয়েছে। 'ব্রেকিং নিউজ' হিসেবে প্রচারিত এ খবরে বলা হয়- 'রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।'

এর কিছুক্ষণের মধ্যে আরও কয়েকটি চ্যানেলের স্ক্রলে সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ হিসেবে একই তথ্য প্রচার করা হয়। তবে কোনোটিরই তথ্যসূত্র ছিল না।

শুক্রবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে কানাডার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পূর্বে তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেছেন বলে কয়েকটি গণমাধ্যমও পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করছে।

তবে বিষয়টি সরকারের কোনো মহল থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।

শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী জানান, ছুটির বিষয়টি তার জানা নেই। যেহেতু প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছুটির মেয়াদ বাড়াননি তাই শনিবার থেকে তিনি অনুপস্থিত বলে গণ্য হবেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন।

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রধান বিচারপতি গত ৩ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যান। পরবর্তীতে ওই ছুটির মেয়াদ বাড়ান ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। ছুটিতে থাকা অবস্থায় গত ১৩ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়া যান।

এর আগে গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি অসদাচরণসহ ১১টি সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ওঠায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আপিল বিভাগের অপর পাঁচ বিচারপতি বসতে চাননি। এমন বাস্তবতায় বিচারপতি ফের আদালতে বসতে চাইলে বা নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ২ অক্টোবর অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। ১৩ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি অসুস্থ নই। পালিয়েও যাচ্ছি না। সাময়িকভাবে যাচ্ছি। আবার ফিরে আসব। বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষার জন্য যাচ্ছি। সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।' পরদিন এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ১১, ২০১৭)