প্রশ্ন ফাঁসে শিক্ষকদের দুষলেন শিক্ষামন্ত্রী
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রশ্নপত্র ছাপানোর স্থান বিজি প্রেস থেকে এখন প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘আগে বিজি প্রেস (সরকারি ছাপাখানা) ছিল প্রশ্ন ফাঁসের জন্য খুবই রিস্কি জায়গা। এখন সেখানে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল মাত্র সকাল বেলা ওই দিনের প্রশ্ন প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। কারণ আমরা সকাল বেলা যখন শিক্ষকের হাতে প্রশ্ন দিই, তখন কিছু শিক্ষক আছেন… যারা সেটা আগেই অ্যারেঞ্জমেন্ট করে রাখেন, প্রশ্নপত্র ছাত্রদের দিয়ে দেন।’
বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেছেন।
তিনি আরো বলেছেন, ‘এই বছরও (জিএসসি পরীক্ষায়) সাড়ে ৯টার পরে একটি প্রশ্ন ফেইসবুকে দিয়ে দিয়েছে। শিক্ষকের হাতে যখন প্রশ্নপত্রটি গেল; তখন নিরাপত্তা ব্যাহত হলো।’
এবারের জেএসসিতে প্রায় প্রতিটির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়েছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ। ইন্টারনেটে আসা কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার মূল প্রশ্নপত্রের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।
আগে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় আগের রাতে প্রশ্নপত্র মিললেও এবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরীক্ষা শুরুর এক থেকে আধা ঘণ্টা আগে তা ফাঁস হয়।
প্রশ্নপত্র ছাপানোর পর সিলগালা করে জেলাগুলোযতে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে যায় থানায় থানায়। ওই পর্যায়েও প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাবনা নেই বলে দাবি টানা আট বছর শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নাহিদের।
এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন শিক্ষামন্ত্রী, যাতেও সফল হননি তিনি।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা এবার পদক্ষেপ নিয়েছি। সকাল বেলা আধা ঘণ্টা আগে শিক্ষার্থীরা হলে ঢুকবে। একটু রেস্ট পাবে, খাতায় তার নাম-ধাম লেখালেখির কাজও সেরে নেবে। আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নের খামটা খোলা হবে।’
আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষা কেন্দ্র ঢোকার নিয়ম প্রথমবার কড়াকড়িভাবে পালন করা হয়নি। শিক্ষকরা বলছেন, দেরির বিভিন্ন কারণ দেখানোর পর শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তা মেনে নিতে হয়েছে তাদের। নিয়মটি কড়াকড়িভাবে পালনের দায়িত্বটি সরকারকেই দিতে চাইছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের দায়ী করে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের নৈতিকতার উন্নতির বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এজন্য সকলের সহযোগিতা চাই। তা না হলে এগোতে পারব না।’
এদিকে চলমান জেএসসিতে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের কেন্দ্র সচিব ড. শাহান আরা বেগমসহ বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর দায়িত্বটি সরকারের। সরকার চাইলেই তা বন্ধ করতে পারে।
সংসদে প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের মোবাইল ফোন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। পরীক্ষার সময় স্মার্টফোন ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
তবে এরপরও এই ধরনের ঘটনা ঘটার কথা স্বীকার করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ১৬, ২০১৭)