দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অনেকটা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শেষ হতে চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। অব্যবস্থাপনার কারণে প্রকাশকদের মধ্যে মেলার প্রথম থেকেই হতাশা দেখা যায়। দুই জায়গায় মেলা হওয়ায় প্রথম দিকে দর্শনার্থীদের ভেতরে যে টানাপোড়েন ছিল যদিও তা ধীরে ধীরে কেটে যায়। তারপরও মাসজুড়ে গ্রন্থমেলায় অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এড়ানোর বিষয়টি নজর এড়ায়নি কারো।

মেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে শুরু থেকেই বহু প্রকাশকই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্টল বিন্যাস, মেলার প্রবেশ পথসহ নানা বিষয়ে ছিল প্রকাশকদের অসন্তোষ। মেলার শেষদিকে এসেও তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা গেছে।

তবে এসব ক্ষোভের কারণ হিসেবে প্রকাশকরা জানিয়েছেন, গ্রন্থমেলা শুরুর পর থেকে মেলার আয়োজক কমিটি গ্রন্থমেলার দিক থেকে নজর ফিরিয়ে নেন। এ সময় মেলায় কী হয়েছে, কী করা যেত এসব বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপই করেননি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে মেলার মনোরম পরিবেশ নষ্ট করে মেলার বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়। একাডেমির একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও প্রকাশকদের যোগসাজশে মেলার এ হাল হয়েছে বলে জানান প্রকাশকরা।

গ্রন্থমেলার প্রথম সপ্তাহেই মেলার আশপাশের এলাকা পরিণত হয় পাইরেটেড বই বিক্রির মেলায়। এসব বইয়ের দোকানের পাশাপাশি ফুটপাতজুড়ে বসেছে জুতার দোকান থেকে শুরু করে তাওয়া, কড়াই, খুন্তি, বঁটি, ডাল ঘুটনি, চুড়ি, মেয়েদের স্কার্টসহ গৃহস্থালির নানা পণ্যসামগ্রীর দোকান।

মেলার আরেক প্রবেশপথ টিএসসির সড়কের ফুটপাতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বসেছে বৈকুণ্ঠ, আবৃত্তিমেলা ও কবিতার দোকান নামের তিনটি আবৃত্তি সংগঠনের স্টল। তাদের দেখাদেখি ফুটপাতসহ মেলার প্রবেশপথের রাস্তাজুড়ে বসে গেছে মুড়ালি, কুশন, আচার, ওড়নাসহ নানা পণ্যের ভাসমান দোকান। একইভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলায় প্রবেশের ডানপাশের অংশে অগোছালোভাবে বসেছে বিরিয়ানি, চটপটিসহ নানা দোকান।

শুধু তাই নয় বইমেলায় যারাই আসছেন তাদের বেশিরভাগই স্টল কিংবা প্রকাশনী খুঁজে পাচ্ছেন না। অনেকেই মিডিয়া সেন্টারকে তথ্য কেন্দ্র মনে করে আসছেন। তাছাড়া মেলার মধ্যে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। নামাজ পড়ার জায়গা কিংবা পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য শৌচাগার খুঁজে পাচ্ছেন না। যার ফলে দর্শকরাও বিভ্রাটের মধ্যে পড়ছেন।

সেবা প্রকাশনী জুনিয়র ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, আসলে মেলার বাইরে পাইরেটেড বইয়ের বিক্রি বন্ধে আমরা প্রকাশকদের পক্ষ থেকে বারবার কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। দিনের পর দিন এসব বই বিক্রি করে মূল গ্রন্থমেলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে একশ্রেণির ব্যবসায়ী।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৪)