ঢাকা লিট ফেস্ট নিয়ে কিছু কথা
এতো সুন্দর লিট ফেস্ট কেন আমাদের সাহিত্যের কোন কাজে আসবে না:
প্রতি বছর ঢাকাতে লিট ফেস্ট হচ্ছে কয়েক বছর ধরেই। প্রথমে এটার বিরুদ্ধে কিছু লেখক আপত্তি তুলেছিলেন। পরে যখন বুঝতে পারলেন তাদের আপত্তির বিষয়টা খামাখা ও হীনমন্যতাপ্রসূত। এবং যেসব লজিক তারা দিচ্ছিলেন তাও হাস্যকর। পরে ধীরে ধীরে থেমে গেছে।
আপত্তি যারা তুলেছেন এরা নিজেরা মূলধারার পত্রিকাতে লেখার জন্য সম্পাদকের পায়ে তেল ঘষতে ঘষতে হাতের ছাল উঠায় ফেলায় কিন্তু যখন বলে লিট ফেস্ট সাম্রাজ্যবাদি কারবার তখন পাবলিক না হেসে পারে না। মাফিয়া মিডিয়া ও সব পুঁজি একই আচরণ করে। প্রথম আলোর ছায়াতে থাকলে ভাল আর লিটফেস্ট খারাপ এমন কুযুক্তি এখন আর টিকছে না। দুইটার বাসনার মধ্যে কোন তফাত নাই -এটা না বুঝে খামাখা আপত্তি করা লেখকরা এখন একটু লজ্জিত মনে হচ্ছে। তবে অনেকে এখন লিট ফেস্ট এ যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তার পরেও অনেকে নিজেদের ইচ্ছায় বা যোগাযোগের অদক্ষতার জন্য বা গ্রুপ মেনটেইন না করতে পারার জন্য বাদ পড়লে লিট ফেস্টের ১৪ গুষ্টি ধরে গালাগালি করেন। তবে এখন এটা কিছুটা কমেছে। কারণ, ঢাকার চেতনা ও গোষ্ঠীবাদী লেখকদের হাওকাও করার জন্য বাইরে একটা জায়গা দেয়া হয়েছে। সেখানে ওরা সাহিত্যের নামে চিল্লা-ফাল্লা করেই মনে করছে জাতে উঠে গেলাম।
এটা আয়োজকদের ভাল টেকনিক। কিছু হাড্ডি ছিটায়ে কুত্তা ঠাণ্ডার কৌশলের মতো বিষয়টা। ওরা বাইরের নজরুল মঞ্চে ব্যাপক এনার্জি খরচ করে। সার্কাস হিসেবে ওদের রাখা হয়। এতেই ওরা ব্যাপক খুশি।
লিট ফেস্ট আসলে কতটা কাজের:
আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই ধরণের আয়োজনের পক্ষে। কারণ, এতে ঢাকার যেসব কবি সাহিত্যিকরা এখনও "কলকাতা সিনড্রমে" আক্রান্ত তারা দ্রুত সিন আউট হয়ে যাবেন। কলকাতার কালচারাল উপনিবেশের চেয়ে ইংরেজি ভাষা-ভাষি দুনিয়ার প্রভাব মেনে নিতে আমি রাজি। যদিও এখন আর সেই দিন নাই। ইংরেজি ভাষা নিজেই একটা ডিসেন্টালাইজেশন প্রক্রিয়ার ভিতর আছে। কাজেই দাদাদের দাদাগিরির চেয়ে বাইরের দুনিয়ার সাথে যত আনাগোনা বাড়বে তত এই ফ্যাসিস্ট সংষ্কৃতি চর্চার মঞ্চ দুর্বল হবে।
আর যারা শাহবাগে ঘুরেই, বাড্ডার রাস্তায় টাংকি মেরেই, যৌন বিকারের কিছু ফিরিস্তি লিখেই নিজেকে বিশাল সহিত্য প্রতিভা মনে করেন তারাও দেখতে পাবেন দুনিয়া আরও বড়। দুনিয়ার সাহিত্যের বাজারে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ প্রায় শূন্য। কাজেই এই অহংকারের দুই পয়সা দাম নাই।
আর যারা মনে করেন ইংরেজি তো সাম্রাজ্যবাদি ভাষা তারা বোকার স্বর্গে আছেন। এরা আসলে কোন ভাষাই ভাল করে পারেন না। আপনি সাহিত্য যে ভাষাতেই করেন, "সাহিত্যের" শর্ত পূরণ করতে পারলে, সাহিত্যের "সত্য" আপনার সাহিত্যে হাজির হলে তা দুনিয়ার সম্পদে পরিণত হতে এখন আর সময় লাগে না। দুনিয়ার অনেক বেস্টসেলার গ্রেট রাইটার ইংরেজিতে লিখেন না কিন্তু ইংরেজি ভাষাসহ সব প্রধান ভাষাতেই হাজির থাকেন। যেমন, মুরাকামি, কুন্দেরা। ঝুম্পা লাহিড়ি তো ইংরেজি ছেড়ে ইতালিয় ভাষায় লিখছেন। তিনি এই ভাষা শিখেছেন। এবং এই ভাষায় লিখছেন। অনুবাদ হচ্ছে। প্রভাব বিস্তার করার জন্য ভাষা এখন আর সমস্যা না।
চিন্তার প্রভাব না থাকলে কোন ভাষাতেই কাজ হবে না। আর নিজে ক্যাপাবল হলে ভাষা আপনাকে হেল্প করবে না। আপনি হিব্রু ভাষাতে লিখেন সমস্যা নাই। রাতারাতি অনুবাদ হবে। ইংরেজিতে লিখেন না কিন্তু ইংরেজি ভাষাভাষী এলাকায় প্রভাবশালী এমন লেখক এখন অনেক। কাজেই ভাষা ঘৃণা আর বাংলা বর্ণমালা পূজা আমাদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে না -এটা মনে রাখতে হবে। আর একাধিক ভাষা শিখতে পারা সব সময়ই কাজের। এটা খুব উতসাহিত করা দরকার। তবে ভাষার সাথে, সংস্কৃতির সাথে কলোনিয়াল আচরণ ও রুচি রপ্ত করার চেষ্টা করা গভীর অসুখ। এটা হীনমন্যতা। আশা করি এটা নিয়ে ডিটেল বলার দরকার নাই। যে কোন ভাষা ও সংষ্কৃতির হেজিমনির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এটা মনে রাখা দরকার। কোন কিছু পূজারীর মানসিকতা নিয়ে দেখার দরকার নাই। দেখতে হবে ক্রিটিক্যালি। ক্রিটিক একটি ইমানেন্ট প্রসেস মানে ক্রমাগত ভাবে নতুন নতুন পথ তৈরি করে।
তো ভাষা নিয়ে এইসব ফালতু যুক্তির কোন মানে হয় না। আর ইংরেজি তো মিনিমাম অর্থে পারাও উচিত আমাদের। তো যেটা বলছিলাম, লিট ফেস্টে আরেকটা ভাল জিনিস হয় তা হল, দুনিয়ার অনেক নতুন রাইটারের বই পাওয়া যায়। হুম, অনেক দাম। তো দাম কোন ব্যাপার না। সাহিত্য তো মাগনা হয় না। সময়, মেধা, সাথে টাকা, এর সবই লাগে। আপনি যদি মনে করেন কোন রাইটারের বই আপনাকে পড়তে হবে (নিজেকে গড়ে তুলতে হলে) তাইলে রিকশা চালায়া হলেও বই কিনবেন। ভাতের টাকা বাঁচায়া বই কেনা অনেক পাবলিক আমি নিজেই দেখছি। আমি মূলত যাই বই কিনতে। সারা বছরে আমার আয়ের সিংহ ভাগই বই কেনার জন্য রাখি। সেই জন্য গত ৪/৫ বছর ধরে বই কেনাতে আমার কোন অভাব হচ্ছে না।
অন্যদের খবর জানি না। তবে অনেক নতুন বই লিট ফেস্ট উপলক্ষে ঢাকাতে আসে এটা খুবই ভাল দিক।
লিট ফেস্ট সাহিত্যের উন্নতিতে কেন কোন কাজে লাগবে না:
কিছু ভাল দিক থাকার পরেও আমাদের সাহিত্যের জন্য লিট ফেস্ট কোন কাজে আসবে না। এতো বছরেও এই অনুষ্ঠানের ফলে আমাদের সাহিত্যে কোন পরির্বতন লক্ষ করা যায় নি। আশা করা যায় সামনেও যাবে না। কেন? খুলে বলি...
এক.
যারা আয়োজন করেন তাঁরা এই বিষয়টার জন্য, মানে সাহিত্যের জন্য খুব যোগ্য লোক না। এরা কিছু টাকা বানাইছেন। দেশে কিছু পোষ্য লেখক-কবি আছে তাদের হাতে। যারা খুবই অশিক্ষিত ও গোয়াড় টাইপের নেইম/ফেইম সিকার। তাদের সহযোগিতায় বিদেশি নামি-দামি লেখক কে এনে নিজেদের "এলিটিজম" প্রদর্শন করার জন্য এরা এই কয়টা দিন খুব পরিশ্রম করেন। এরা জানে না, জ্ঞানগত ভাবে যে "এলিট" না তার যতই টাকা থাক একজন পিওর থিংকার তাদের লাফালাফিকে রাম ছাগলের উল্লাসের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন না। দেয়ার কোন কারণ নাই। আমাদের অনেক ভাই-ব্রাদার দেয় না।
যারা হীনমন্য তারাই ভড়কে যায় এই সব জাকজমক দেখে। এরা যে সব গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের নিয়ে আসেন তাদের কে খাচায় বন্দি করে রেখে পাবলিককে দেখায়। ঢাকার কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের সাথে তাদের কোন ইন্টারেকশনের সুযোগ দেয়া হয় না। শুধু মাত্র নিজেদের মিডিয়ায় কিছু খবর ছাপায়। এর বাইরে অন্যরা বা গোষ্ঠির বাইরের লেখকদের ইন্টারেকশনের কোন সুযোগ নাই। নানান কাহিনী তৈরি করে এরা একটা বলয় তৈরি করে রাখেন।
এরা আসলে দেখাতে চায় এতো সহজ না এতো বড় রাইটারকে আনা। সো এটাকে তো নিজের হাতে রাখতে হবে। মানে কিছু ইতর লোক যেমন, গরিবের সামনে মুরগার রান চিবায়ে মজা পায়, গরীবদেরকে নিজের চাক-চিক্য দেখাতে আরাম পায় ঢাকা লিট ফেস্টে এই একই ফকিন্নিপনার ব্যাপক হাজিরা আছে। ফলে এইভাবে ৫০ হাজার বছর ধরেও আয়োজন চলতে থাকলে আমাদের সাহিত্য পরিমন্ডলে তার কোন প্রভাব পড়বে না। বরং হীনমন্যতা বসত কিছু লোক ওদের দলে ভিড়ে যাবে। কিছু লোক খামােখা বিরোধিতা করবে।
কিন্তু ইন্টারেকশনের সুযোগটা গোষ্ঠিবদ্ধ তা আর ওদের গন্ডির বাইরে না আসলে এর কোন সুফল ঢাকার সাহিত্য পাবে না। সাহিত্য কোন দিন শুধু দলবাজি করে হয় না।
যারা আয়োজন করেন এবং অনেক মহান লেখককে নিয়ে আসেন কিন্তু তার সম্পর্কে ভাল করে জানেনই না। ঢাকার এলিটদের দেখছি করুণ অবস্থা। টাকা থাকলেও চিন্তা করার ক্ষমতা ও পড়াশোনার দিক থেকে খুবই পিছিয়ে আছেন। ফটফট করে ইংরেজি বলে দেখে গ্রামের অনেক কবি হয়তো ওদের দেখলে ঘাবড়ে যাবেন কিন্তু যেসব সাহিত্য তারা সৃষ্টি করেন (একজন/দুইজন ব্যতিক্রমবাদে) তা দুনিয়ার সাহিত্য বাজারে কোন পাত্তাই পায় না। বাংলায় যারা লিখেন তাদের ইংরেজি অনুবাদ হওয়ার পরেও চলে না। কারণ এরা খুবই গড়পত্তা লেখক। এই সব ১৯ শতকী আইডিয়ার গল্প এখনকার দুনিয়ায় অচল। অথচ এরাই বাংলা সাহিত্যের তারকা রাইটার। ইংরেজিতে লিখলেও এদের সাহিত্যের কোন কদর হইত না। কাজেই ইংরেজিতে লিখলেই যে সে মহাপন্ডিত আর আপনি কিছুই না এটা মনে করার কোন কারণ নাই। ঢাকার এলিটরা হাইব্রিড এলিট। এদের কোন জ্ঞানতাত্বিক বা সাহিত্যিক সম্মৃদ্ধি নাই। এরা খুব কমই পড়া-শুনা করেন। একটা উদাহরণ দেই-
এবার বেন ওকরি এসেছেন ঢাকা লিট ফেস্টে। বেন ওকরি গ্রেট রাইটার। ৯১ সালে বুকার পাইছেন। ঢাকাতে উনার বই পত্র কিছু দিন হল আসতে শুরু করেছে। তো একটা অনুষ্ঠানে দেখা গেল যে বইটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা কোন অডিয়েন্সই পড়ে নাই। অথচ হলটা ভরা ছিল। জানেই না তার সম্পর্কে। কিছু প্রবাসী বাদে দেশের এলিট অডিয়েন্স জানেই না। অথচ এই অডিয়েন্সকে ঢাকার এলিট বলা যায়। আমি ওকরির লেখা ২০১৪ সাল থেকে পড়ছি। তাঁর প্রায় সব বইই আমার সেল্ফে আছে। তার লেখা ধরে যখন কথা বলছিলাম তিনি অবাক হয়েছেন। ঢাকাতে বই কিভাবে পেলাম জানতে চাইল। বললাম, বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে আনিয়েছি, একটা লেখায় উনার রেফারেন্স পেয়ে বই অর্ডার করেছিলাম। তখন ৯৫ পাতার যে বইটা ১৪শ টাকাতে কিনেছি এখন সেটা দেখলাম ঢাকাতে ৬শ টাকায় পাওয়া যায়।
উনার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলেছি। সাধারণত অনেক সময় বড় লেখককে কাছ থেকে দেখে মোহ ভঙ্গ হয়। ওকরির বেলায় তা হয়নি। সুন্দর অভিজ্ঞতা বলতে হবে। লন্ডনে গেলে আরও কথা বলবো। উনি বেশ আগ্রহী দেখলাম কথা বলতে। আজও যেতে বলেছিলেন কিন্তু অন্য কাজ থাকায় আর যাইতে পারি নাই। ওকরির কাজ নিয়ে আমি আগামী মার্চে বাংলাতে একটা লেখা লিখব। কথা দিলাম।
কিন্তু আয়োজকরা দেখলাম এমন একজন রাইটারকে ঠিক মতো ট্রিটই করতে পারছেন না। এটা তাদের দোষ না। দোষটা তাদের চিন্তার। বেন ওকরি ফাংশন করেন পোস্টকলোনিয়াল ও পোস্টমর্ডান চিন্তার জগতে। আর এরা এখনও তথাকথিত প্রগতিশীলতা, আধুনিকতা ও কলোনিয়াল প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ ক্ষমতা ধর প্রভুর পায়ে চুমা খাইতে ব্যাস্ত।
বেন ওকরি লেখা কিছু লাইন আমি মাঝে মাঝেই গত কয়েক বছর ধরে ফেবুতে পোস্ট করে আসছি। তার,"এ টাইম ফর নিউ ড্রিমস" বইয়ে বলেছেন,
একটা জাতির অধঃপতনে কোন রহস্য নাই। এটা শুরু হয় তার লেখকদের অধঃপতনের মধ্যদিয়ে।"(পৃষ্ঠা-১৫)
বাংলাদেশ এর জলন্ত সাক্ষী। স্মরণ করুন শাহবাগে তাদের উল্ম্ফন ও এখনকার রাজনৈতিক কৌতুক। তো এইসব অধঃপতিত লেখকরা কি ভাবে তাঁকে ডিল করনে?
তার সাথে ঢাকার কবি-সাহিত্যিকদের কোন ইন্টারেকশনই হল না। হোটেল থেকে অনুষ্ঠানে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসছেন আবার অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে নিয়ে ঘুম পাড়ায়ে রাখছেন।
ঢাকার কবি-সাহিত্যিকদের বিজি রাখা হয়েছে তাদের গ্রুপবাজিতে। আর সাথে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে কলকাতার কিছু দাদাদের। ওদের দৌড়ও দেখলাম কলকাতা পর্যন্তই। অন্য লেখকদের নিয়ে কোন আগ্রহ দেখলাম না। যে যত গ্রেটই হোক। ওরা বিজি ওদের লবিং নিয়ে। যে ওর প্রশংসা করে তার কাছে যাবে। সেও তার প্রশংসা করবে। এভাবে ওরা বড় লেখক হবে।
বেন ওকরির জন্ম নাইজেরিয়াতে। বেড়ে উঠেছেন লন্ডনে। এন্টিকলোনিয়াল ও পোষ্টমর্ডান সাহিত্যের পরিমন্ডলে অতি কদর পেয়ে থাকেন। সন্দেহ নাই উনি কদরের যোগ্যও। তো এমন লেখকদের সাথে আলোচনা অনুষ্ঠানগুলোও পরিচালনা করছে বিদেশি লোকজনই। তার মানে ওদের পোষ্য অশিক্ষিত লেখকরা এমন রাইটারের সাথে একটা আলোচনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করারও যোগ্যতা রাখে না। ফলে এমন অনেক গ্রেট লেখককে ঢাকাতে পেয়েও কোন কাজের কাজ হচ্ছে না- আমদের সাহিত্যে।
কবি আদোনিসকে দেখলাম ঢাকা ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্যপক সেল্ফি তুলছে। ওখানে কোন সাহিত্যবোদ্ধা বসেন আমি জানি না? কবির তো কবিদের সাথে, পাঠকদের সাথে সময় কাটাবার কথা। ক্লাবের মাতলামি/মাতামাতিতে কি কাজ?
আয়োজকদের নিজেদের প্রমোশনের জন্য এমন অনুষ্ঠান হলে ঠিক আছে। এটা নিয়ে কোন কথা নাই। তারা বিদেশি নামি-দামি লেখক আনবে। নিজেরা কত দূর পারেন তা অশিক্ষিত ও গরিব কবি-সাহিত্যিকদের দেখাবেন।
তাদের নিয়ে যা খুশি করবেন। কোন সমস্যা নাই। কিন্তু এটাকে তারা যে, সাহিত্যের খেদমত বলে প্রচার করছে তা ডাহা মিথ্যাচার। কোন লাভ নাই। লাভ হচ্ছে না। হবে না। টাকা হলেই এলিট হওয়া যায় না। নজরটা ছোটলোকি থাকলে কি লাভ শত শত কোটি টাকা দিয়ে? এতো টাকা খরচ করে বড় লেখক আনলেই আমরা আপনাদের সাহিত্যের মুরুব্বি মেনে নিব না। আপনাদের অশিক্ষা এবং খুবই ফকিন্নি মানসিকতার জন্য আপনারা কোন দিনও সম্মান পাবেন না। একজন লেখক শ্রেণী সম্পর্কের বাইরে ফাংশন করতে জানেন।
এমন হাইব্রিড এলিটিজম পুছে না। একজন ট্রু থিংকার একটা সভ্যতার জন্ম দেয়। সো তার/দের সামনে শ্রেণি/লিঙ্গ ও ভাষার গৌরব প্রদর্শন ফকিন্নিপনা। এমন উদ্যোগের সুবিধা আপনারা নিচ্ছেন এটাকে জাতীয় দায়িত্ব পালন এর ভূমিকা আকারে দেখাবার কোন চেষ্টা করে লোক হসানোর মানে হয় না।
কাজেই যারা ঢাকার এই আয়োজনকে নিয়ে নানা রকম ফাও তর্ক করেন আশা করি এবার তা বন্ধ হবে। যার যা দরকার তা আদায় করে নিবেন। নিজের সাথে লড়াই ছাড়া বড় হওয়া যায় না। এই সত্য বুঝতে পারা খুব দরকার।
সবাইকে ধন্যবাদ। আমার কোন কথা ব্যক্তিগত আবেগ-ইমোশন থেকে নিবেন না। আমি পারসোনাল জায়গা থেকে লিখি না।