দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : বিরোধী দলের ডাকা হরতালে দেশব্যাপী সহিংসতার কারণে হরতাল কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য সংসদ সদস্যদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে বৃহস্পতিবার পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই আহ্বান জানান তিনি।

সুরঞ্জিত বলেন, ‘এখন সময় এসেছে জাতীয় সংসদকে ভাবতে হবে এই রকম হরতালের কি আর গণতান্ত্রিক অধিকার আছে কিনা। সুপ্রীম কোর্ট হস্তক্ষেপ করার আগে এই সংসদের সব সদস্যকে আহ্বান করব এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। আজ আমরা ইতিহাসের দোরগোড়ায় চলে এসেছি। এখন আর হরতাল চলতে দেওয়া যায় না। এই আতঙ্কগ্রস্ত হরতাল বন্ধ করতে হবে। এমন কিছু করুন যেন পরবর্তীতে আপনারা এই সিদ্ধান্তের জন্য মানুষের কাছে অমর হয়ে থাকবেন। যদি কোনো সিদ্ধান্ত না নেন তাহলে সুপ্রীম কোর্ট কিন্তু চোখ বুজে বসে থাকবে না।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের হাই কোর্ট হরতালের ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল দিয়েছিলেন। সেই রুলে আমরা ও বিএনপি শুনানিতে উপস্থিত ছিলাম। পরবর্তীতে হাই কোর্টের সেই বেঞ্চ হরতালকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি রায় দেন। পরবর্তীতে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তখন আপিল বিভাগ হাই কোর্টের দেওয়া রায়কে বাতিল করে দেন। কিন্তু কিছু মন্তব্যও করেন। সুপ্রীম কোর্ট তার মন্তব্যে বলেন হরতালে যদি কোনো ফৌজদারি অপরাধ সংঘঠিত হয় তাহলে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’

দফতরবিহীন এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রে হরতাল অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেরালায় হরতাল অবৈধ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে হরতাল অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্ট রায় অমান্য করায় ২৪ লাখ রুপি জরিমানা করা হয় হরতাল আহ্বানকারীদের, মহারাষ্ট্রে হরতাল আহ্বানকারীদের গুনতে হয়েছে ২০ লাখ রুপি, চীন, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে হরতাল অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদেরও সিদ্ধান্ত নিতে হবে হরতালে সহিংসতায় শাস্তিসহ ক্ষয়ক্ষতি জন্য ক্ষতিপূরণ এবং হরতালের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির ক্ষতিপূরণ হরতাল আহ্বানকারীদের দিতে হবে।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘বিরোধী দলের বিগত কয়েক দিনের হরতালে সারাদেশে প্রায় ২৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আরও পাঁচ জন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। এসব সহিংসতা ও নিষ্ঠুরতায় হরতাল আহ্বানকারীদের বিন্দুমাত্র দুঃখ প্রকাশ করছে না। কেন এই হরতাল? অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে এই হরতাল? বর্তমান সরকারের মূল অঙ্গিকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করা।’

(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/আরএইচ/এনডিএস/এমডি/নভেম্বর ০৭, ২০১৩)