দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি)সদরদপ্তর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় জজ আদালতে যে দুই রাজনৈতিক নেতার যাবজ্জীবন সাজার রায় হয়েছিল, তাদের একজন ছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলী। সোমবার এই মামলা থেকে তাকে মুক্তি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার আলোচিত এ মামলার আপিল রায় ঘোষণা করেন।

আসামি সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলায় হাইকোর্টের রায়ে ১৩৯ জনের ফাঁসির রায় বহাল রেখে ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২২৮ জনের ৩ থেকে ১০ বছরের সাজা হয়েছে এবং খালাস পেয়েছেন মোট ২৮৮ জন।

ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল।

দণ্ডিতদের অধিকাংশই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ান ও নন কমিশনড অফিসার হলেও যাবজ্জীবনের দুই আসামি ছিলেন দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা।

তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ছিলেন একজন সাবেক সংসদ সদস্য। রাজশাহী কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ৩ মে হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি তোরাব আলীকেও জজ আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আপিল শুনানি করে হাইকোর্ট সোমবার তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭৪ জন নিহত হন। ওই হত্যাকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগে তোরাব আলীকে ৩০২ ধারায় সাজা দিয়েছিলেন জজ আদালতের বিচারক।

তোরাব আলীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছিল, বিডিআরের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সুপরিকল্পিত এ বিদ্রোহের কথা আগেই জানতে পারেন। কিন্তু তিনি তা কর্তৃপক্ষকে জানাননি।

জজ আদালতের রায়ে এ মামলায় বাহিনীর বাইরে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল জজ আদালত। তিনি পিলখানার পাশের এলাকার বাসিন্দা নায়েক সুবেদার (অব.) কাঞ্চন আলীর ছেলে জাকির হোসেন।

হাইকোর্টের রায়ে জাকিরের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেছেন, ‘জাকির হোসেন ও তোরাব আলীর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আমি নোট দেব। বাকিদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে আপিলের বিষয়ে মতামত দেওয়া হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ২৭, ২০১৭)