দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের পঞ্চম আসরে চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় পেয়েছে রংপুর রাইডার্স।  

মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। এই ম্যাচে আগে ব্যাটিং করা সিলেট জয়ের জন্য রংপুরকে ১৭৪ রানের টার্গেট দিয়েছিল।

এই জয়ের পরও ৯ খেলায় ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে রয়েছে রংপুর। অপরদিকে, ১০ খেলায় ৩ জয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানেই থাকলো নাসির-সাব্বিরের সিলেট। নিজেদের মাঠে প্রথম তিন ম্যাচ জয়ের পর আর কোন ম্যাচই এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি সিলেট।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি। স্কোর বোর্ডে ৫৩ রান উঠতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে সিলেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ১৭ বলে ২৬, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান ৫ ও অধিনায়ক নাসির হোসেন ৪ রান করে আউট হন। এই তিন ব্যাটসম্যানকেই শিকার করেন রংপুরের বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম।

উপরের সারির তিন ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে ৫০ বলে ৭৪ রান যোগ করেন পাকিস্তানের বাবর আজম ও সাব্বির রহমান। দু’জনই ৩৭ বল মোকাবেলা করেছেন। তবে বাবর হাফ সেঞ্চুরি পেলেও, ৫টি চারে ৪৪ রানে থামেন সাব্বির। বাবরের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান। তার ইনিংসে ৪টি চার ও একটি ছক্কা ছিল।

এ ছাড়া শেষ দিকে ইংল্যান্ডের দুই খেলোয়াড় রস হোয়াইটলির ১১ বলে ১৭ ও টিম ব্রেসনানের ৫ বলে ১৬ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩ রানের লড়াকু স্কোর পায় সিলেট। রংপুরের নাজমুল ৩টি ও মাশরাফি ১টি উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৭৪ রানের লক্ষ্যে শুরুতে ধাক্কা খায় রংপুর। প্রথম ওভারের চতুর্থ বল ও দলীয় ৭ রানে ফিরে যান বিধংসী ব্যাটসম্যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল। ১টি চারে ৩ বলে ৫ রান করেন তিনি। গেইলকে হারানোর পর রংপুরের রানের দ্রুতই ঘুরেছে জিয়াউর রহমানের ব্যাটিং নৈপুণ্যে। ওপেনার হিসেবে নেমে মারমুখী ব্যাটিং করেছেন তিনি। পাশাপাশি তিন নম্বরে নামা নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তো ছিলেনই। জিয়াউর ও ম্যাককালামের ঝড়ো ব্যাটিং-এ ৫ দশমিক ৩ ওভারে ৬৬ রান পেয়ে যায় রংপুর। ওই ওভারের চতুর্থ বলে জিয়াউরকে থামিয়ে সিলেটকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় মাত্র ১৮ বলে ৩৬ রান করেন জিয়াউর।

জিয়াউর ফিরে যাবার পর উইকেটে গিয়েও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মোহাম্মদ মিথুন। ১৮ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে ম্যাককালামের সঙ্গী হন ইংল্যান্ডের রবি বোপারা। দু’জনই কার্যকরী ইনিংস খেলে ফিরেন। ম্যাককালাম ৩৮ বলে ৪৩ ও বোপারা ২৪ বলে ৩৩ রান করেন। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের বিদায়ের ফলে শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ২০ রান দরকার হয় রংপুরের।

তাই এমন পরিস্থিতিতে আবারো রংপুরের ত্রাণকর্তা হিসেবে আর্বিভূত হন মাশরাফি। আগের ম্যাচে তিন নম্বরে নেমে ১৭ বলে ৪২ রান করা মাশরাফি ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই পাকিস্তানের সোহেল তানভীরকে ছক্কা হাঁকান। এরপর ওই ওভার থেকে আরও আরও ৫ রান নেন মাশরাফি ও নাহিদুল। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ৯ রান।

ওই ওভারে ইংল্যান্ডের টিম ব্রেসনানের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে আবারো ছক্কা হাকিয়ে রংপুরের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন মাশরাফি। শেষ পর্যন্ত ঐ ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মেরে রংপুরকে জয় এনে দেন নাহিদুল। ২টি ছক্কায় ১০ বলে অপরাজিত ১৭ রান করেন মাশরাফি। এছাড়া নাহিদুল ৭ বলের অপরাজিত ১৪ রান করেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন নাজমুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

সিলেট সিক্সার্স : ১৭৩/৫, ২০ ওভার (বাবর ৫৪, সাব্বির ৪৪, নাজমুল ৩/১৮)।

রংপুর রাইডার্স : ১৭৭/৬, ১৯.৪ ওভার (ম্যাককালাম ৪৩, বোপারা ৩৩, আবুল ১/২৫)।

ফল : রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : নাজমুল ইসলাম (রংপুর রাইডার্স)।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ২৮, ২০১৭)