এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাসান চরে আশ্রয়ণ প্রকল্প
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য নোয়াখালীর হাতিয়ার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসান চরে বাসস্থান অবকাঠামো নির্মাণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। ২০১৭ সালে ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে এ আশ্রয়ণ প্রকল্প, যেখানে আশ্রয় পাবে এক লাখ রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার সকালে শের-ই-বাংলা নগরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ১০ হাজার ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ টি উন্নয়ন প্রকল্প পাস হয় একনেক সভায়। এরমধ্যে ১৫৭৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ জোনে বিদুৎ বিতরণ এবং মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ি জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ১ হাজার ৫৬০ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রকল্প রয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে। কিন্তু এত অভিবাসীকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দরকার। বর্তমানে অনেক রোহিঙ্গা খোলা আকাশের নিচে অমানবিক পরিবেশে বসবাস করছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, নোয়াখালী জেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নে ভাসান চরের অবস্থান। নোয়াখালী থেকে এর দূরত্ব ২১ নটিক্যাল মাইল।
মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘বিপন্ন রোহিঙ্গাদের বিশাল স্রোত দেশের নিরপাত্তা ও পরিবেশ দুটোর জন্যই হুমকি হিসাবে দেখা দিয়েছে। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত অসহায় মিয়ানমারের নাগরিকদের কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বসবাসের স্থান সঙ্কুলান করা কঠিন হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত পাহাড়ি জমি ও বনাঞ্চল নষ্ট হচ্ছে।’
টেকনাফ ও উখিয়ায় স্থানীয় অধিবাসীদের সংখ্যা যেখানে ৫ লাখ ৭ হাজার, সেখানে নতুন-পুরনো মিলিয়ে দশ থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গা ওই এলাকায় আশ্রয় নেওয়ায় নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে এবং পর্যটন এলাকা কক্সবাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় প্রকল্পের কার্যপত্রে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত ভাসান চরের ভূমি উন্নয়ন ও সমুদ্রতীরের নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের জন্য সেখানে ১২০টি গুচ্ছ গ্রামে ১৪৪০টি ব্যারাক হাউজ ও ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়া থাকবে উপাসনালয়, নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনীর অফিস ও বাসভবন, অভ্যন্তরীণ সড়ক, পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো, নলকূপ ও পানি সরবরাহ অবকাঠামো এবং ওয়াচ টাওয়ার।
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ২৮, ২০১৭)