বান্দরবান প্রতিনিধি : নানা আয়োজনে বান্দরবানে পার্বত্য শান্তি চুক্তির দুই দশক পূর্তি উদযাপিত হয়েছে। শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় রাজারমাঠে বর্ষপূতিকে ঘিরে সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী চিকিৎসা শিবির, স্বেচ্ছায় রক্তদান, শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন প্রধান অতিথি বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রীগেডিয়ার জেনারেল জোবায়ের সালেহীন।

অন্যদের মধ্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা, বিজিবি বান্দরবান সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মো: ইকবাল হোসেন, পৌরসভার মেয়র মো: ইসলাম বেবী, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু মারমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষি পদ দাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্ধোধনের পর অতিথিরা দুই সহস্রাধিক গরীব অসহায় পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মাঝে শীতবস্ত্র এবং শহরের দশটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। পরে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

সেনা রিজিয়নের জিএসটু মেজর মেহেদী হাসান জানান, শান্তি চুক্তির দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুদিন ব্যাপী ফ্রি চিকিৎসা শিবির, স্বেচ্ছায় রক্তদান, শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রীতি ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছে। দুই সহস্রাধিক গরীব অসহায় পাহাড়ী-বাঙ্গালী রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, ঔষুধ সরবরাহ, শীতবস্ত্র দেয়া হয়েছে। দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। আর স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীরও আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রীগেডিয়ার জেনারেল জোবায়ের সালেহীন বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় নতুন করে কোনো সন্ত্রাস নাই। পাহাড়ের সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোর দোড়গোড়ায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো পৌঁছে দিতে চাই। পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ীরা উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করণ এবং বিক্রির নিশ্চয়তা নিশ্চিত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।

বিশেষ অতিথি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। এ অঞ্চলের মানুষগুলো এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে অনেকদূর এগিয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ছোয়া লেগেছে পাহাড়ের প্রান্তিক জনপদেও। শান্তি চুক্তির সুফল ভোগ করছে পার্বত্যবাসী। দূর্গমাঞ্চলে গড়ে উঠেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য ক্লিনিক। পাহাড়ের মানুষের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ০২, ২০১৭)